বিশ্বখ্যাত কারি শায়েখ আহমদ কামিল ইন্তেকাল করেছেন

0
(0)

মো.আহছান উল্লাহ।

সুরেলা কণ্ঠে কোরআন তিলাওয়াতের জন্য সবার কাছে সমাদৃত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই আলেম মাত্র ৩৮ বছর বয়সে জনপ্রিয় ইমাম বিশ্বখ্যাত কারি শায়েখ আবদুল্লাহ আহমদ কামিল মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার ব্রুকলিনের মুসলিম কমিউনিটি সেন্টার (এমসিসি) তার মৃত্যুর খবর জানায়।

শায়খ আবদুল্লাহ আহমদ কামিল ১৯৮৫ সালে মিসরের আল-ফাইউম প্রদেশের ইউসুফ সিদ্দিক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জন্মগতভাবেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছিলেন। ছোটবেলায় ব্রেইল পদ্ধতিতে পুরো কোরআন হিফজ করেন।

২০০৫ সালে আল-ফাইউম বিশ্ববিদ্যালয়ের দারুল উলুম কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ২০১৫ সালে তিনি আল-ফজর চ্যানেলে সম্প্রচারিত কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন।

শায়খ আবদুল্লাহর সঙ্গী আবু ইউসুফ বলেন, আজ আমরা একসঙ্গে আমাদের মসজিদে ফজর নামাজ পড়েছি। এরপর আমরা একসঙ্গে দুপুরে জোহরের নামাজ পর্যন্ত একসঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি। এর মধ্যে শুধু খাবার গ্রহণ ছাড়া আর উঠিনি। এ ধরনের আলোচনায় আগে কখনো হয়নি। আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে আমরা হেসেছি ও কেঁদেছি। এসময় তিনি সুরা তাকবির ও ৪০ বছর বয়স নিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করে অনেক কান্নাকাটি করেন। জোহর নামাজের সময় তিনি আমাকে নামাজ পড়াতে বলেন। আমি তাকে এগিয়ে দিই। তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ পড়ান। তখন আমরা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে চাচ্ছিলাম। এরপর আমি ওঠে দাঁড়াই। কিন্তু তিনি আর দাঁড়াননি। তাকে জাগাতে গিয়ে দেখি, তিনি ইতিমধ্যে আমাদের ছেড়ে মহান রবের সান্নিধ্যে চলে গেছেন।’

আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদিস বিভাগের অধ্যাপক ও মিসরের কারিদের শায়খ ড. আহমদ ঈসা আল-মাসারাবি লিখেন, ‘মহান আল্লাহ শায়খ আবদুল্লাহ কামিলের ওপর রহম করুন। তার করবকে আলোকিত করুন এবং জান্নাতে তাকে উঁচু মর্যাদা দিন।’

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ড. মুহাম্মদ আল-সাগির লিখেন, ‘শায়খ আবদুল্লাহ কামিল যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন। সেখানেই তিনি রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়িয়েছেন। সুরলিত কণ্ঠে তার তিলাওয়াত ও আবৃত্তি ছিল খুবই শ্রুতিমধুর। তার স্বরচিত কবিতার আবৃত্তি রয়েছে।’

বিশ্বনন্দিত কারি শায়খ মাশারি রাশিদ আল-আফাসি লিখেছেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি শায়খ আবদুল্লাহ কামিলকে ক্ষমা করুন। তাকে জান্নাতে উঁচু মর্যাদা দান করুন। ঠাণ্ডা পানি ও বরফ দিয়ে তাকে পবিত্র করুন এবং তার পরিবার ও স্বজনদের উত্তম বিনিময় দিন।’

শায়খ আবদুল্লাহ কুয়েত, সৌদি আরব, যক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ গত রমজানে তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের মুসলিম কমিউনিটি সেন্টারে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তা ছাড়া বিভিন্ন সেন্টার ও টিভি-চ্যানেলে তিনি নিয়মিত ইসলামী আলোচনা করতেন। মনমুগ্ধকর তিলাওয়াতের জন্য শায়খ আবদুল্লাহ অনলাইন ও অফলাইন সবখানে খুবই জনপ্রিয়। ইউটিউবের নিজস্ব চ্যানেলে তার তিলাওয়াতের অনেক ভিডিও রয়েছে। তা ছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তার তিওলায়াত নিয়মিত সম্প্রচার হয়।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.