গৌরনদীতে লম্পট চাচা-ভাতিজা কর্তৃক ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষন ॥ গ্রেফতার ১
স্টাফ রিপোর্টার,গৌরনদী
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দক্ষিন চাঁদশী গ্রামের ৪র্থ শ্রেনীর স্কুল ছাত্রী (১২)কে, গত ৪ মাসের ব্যাবধানে প্রতিবেশী শহিদ সরদার (৫৫) ও নাহিয়ান সরদার (১৪) নামের দুই লম্পট চাচা-ভাতিজা কর্তৃক দুইদফা ধর্ষিতা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই দুই লম্পট চাচা-ভাতিজাকে আসামী করে শনিবার গভীর রাতে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ লম্পট ধর্ষক শহিদ সরদারকে গ্রেফতার করেছে। ধর্ষিতার মেডিকেল পরীক্ষার জন্য গতকাল রবিবার বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ধর্ষিতার পরিবার, পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, ধর্ষিতা কিশোরী (১২) উপজেলার চাঁদশী মিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেনীতে পড়ছিল। তার বাবা পেশায় একজন দিনমজুর। গত ৩০ জুলাই সকালে তার বাবা কাজে যায়। মা ছোট ২ বোনকে নিয়ে প্রতিবেশী আনোয়ারের ঘরে যায়। এ সময় ৪র্থ শ্রেনীর ওই কিশোরী স্কুল ছাত্রী (১২) একা ঘরে ছিল। এ সুযোগে ওই দিন সকাল ১০টার দিকে প্রতিবেশী লম্পট শহিদ সরদার (৫৫) তাদের ঘরে ঢুকে মুখে গামছা পেচিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করে। বেলা ১১টার দিকে ঘরে ফিরে নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করতে দেখে কিশোরীর মা ডাক-চিৎকার দেয়। এ সময় লম্পট শহিদ সরদার তাকে নানা প্রকার হুমকি দিয়ে শটকে পড়ে। এরপর কিশোরীর মা স্থানীয় এক চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করিয়ে মেয়েকে সুস্থ্য করেন। এ ঘটনায় ওই সময় কিশোরীর মা থানায় মামলা করতে চাইলে সালিশ মিমাংশার কথা বলে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আবুল সরদার, গ্রাম্য মাতুব্বর নাসির সরদারসহ অনেকে বাঁধা দেয়। তারা ঘটনার প্রায় একমাস পরে সালিশ বৈঠক বসিয়ে ধর্ষক শহিদ সরদারকে ৫হাজার টাকা জড়িমানা করে। জড়িমানার ওই টাকা ধর্ষিতার পরিবার গ্রহন করেনি। ঘটনার পর ধর্ষিতা কিশোরীর পরিবার ধর্ষিতাকে ওই স্কুল পরিবর্তন করে অন্য স্কুলে ভর্তি করেন।
অপরদিকে এ ধর্ষণ ঘটনার প্রায় ৪ মাস পরে ওই স্কুল ছাত্রী (১২)’র বাবা মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে কিশোরীকে তাদের ঘরের মধ্যে একা পেয়ে লম্পট ধর্ষক শহিদ সরদারের ভাতিজা একই গ্রামের সাহিদুল সরদারের ছেলে লম্পট কিশোর নাহিয়ান সরদার (১৪) শনিবার বিকেল জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ বিচারের নামে প্রহসন করা সম্পর্কে জানতে চাইলে চাঁদশী ইউপির সাবেক সদস্য আবুল সরদার বলেন, উভয় পক্ষই আমার বংশের লোক যে কারনে মিমাংশা করে দিয়েছিলাম। অপর সালিশ নাসির সরদারের বক্তব্য জানার জন্য তার বাড়িতে গেলে সাংবাদিক দেখে তিনি আতœগোপন করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক মোঃ গোলা ছরোয়ার জানান, এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদি হয়ে ধর্ষক শহিদ সরদার ও নাহিয়ান সরদারকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ধর্ষক শহিদ সরদারকে গ্রেফতার করেছে। অপর আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ধর্ষিতার মেডিকেল পরীক্ষার জন্য গতকাল রবিবার তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।