গাজীপুরে ড্রামের ভেতর পাওয়া লাশটি স্কুল শিক্ষিকার

এস এম রহামান হান্নান, স্টাফ রিপোর্টার

গাজীপুরে ড্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত নারীর লাশের পরিচয় মিলেছে। নিহত নার্গিস বেগম নরসিংদী জেলার ঘোরাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি নরসিংদী শহরের পূর্ব ব্রাহ্মণদি এলাকার আবদুর রহিমের মেয়ে। রোববার মায়ের লাশ শনাক্ত করেছেন ছেলে নাজিউর রহমান বাবু।
নিহতের স্বজনরা জানান, নার্গিসের স্বামী সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা আনসার উল্লাহ। তিনি ঢাকার ১৭০ নম্বর তেজকুনীপাড়ার বাসায় থাকেন। আনসার উল্লাহর দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী, তার দুই মেয়ে এবং নার্গিসের দুই ছেলের এক ছেলে ও এক মেয়ে ঢাকায় আনসার উল্লাহর সঙ্গে থাকেন। নার্গিসের ছোট ছেলে খুলনায় লেখাপড়া করেন। চাকরির কারণে নার্গিস নরসিংদীতে থাকতেন। ছুটি পেলে নরসিংদী থেকে ঢাকা আসতেন।
গাজীপুরের নিহতের আত্মীয়া শারমিন আক্তার বলেন, নার্গিসের স্বামীর আরেক স্ত্রী রয়েছেন। নার্গিস ছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী। স্বামী আনসার উল্লাহ এখন হজে আছেন। নার্গিসের দুই ছেলের একজন ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং আরেক ছেলে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
নার্গিসের ভাই মো. সাইদুর রহিম জুয়েল জানান, আনসার উল্লাহ ঢাকার তেজকুনীপাড়ার বাসায় প্রথম স্ত্রী ও উভয় পক্ষের সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। তিনি প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে মক্কায় হজ করছেন। আগের স্ত্রীর দুই মেয়ে এবং নার্গিসের তিন ছেলে-মেয়ে রয়েছে।
জয়দেবপুর থানার এসআই মনতোষ চন্দ্র দাস পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরের এক আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে তিনি কমলাপুরে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন নার্গিস। ঈদের দিন সকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোগড়া পেয়ারা বাগানের কাছে ঢাকা বাইপাস সড়কের পাশে এক আড়তের গেটের সামনে ড্রামে ভরা তার লাশ পাওয়া যায়। নিহত নারীর পরনে টিয়া রংয়ের সালোয়ার-কামিজ ছিল। লাশটি উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। লাশটিতে পচন ধরেছে। ধারণা করা হচ্ছে ৪-৫ দিন আগে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যার পর ড্রামে ভরে বাইপাস সড়কের পাশে ফেলে রেখে গেছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, নিহতের বুকে ও পেটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে ৩-৪ দিন আগে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার ঈদের দিন দুপুরে গাজীপুরের ভোগড়া পেয়ারা বাগানের কাছের আড়তের গেটের সামনে থেকে একটি ড্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে সেদিন তার পরিচয় জানা যায়নি।