কমলগঞ্জে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শ্বাশুড়ি আটক

জয়নাল আবেদীন,কমলগঞ্জ সংবাদদাতা//
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার। এ ঘটনায় থানায় মামলা। স্বামী পলাতক। শ্বাশুড়ী আটক। রবিবার সকালে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর নিহত গৃহবধূর বড় ভাই বাদি হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে রাতে সৎ শ্বাশুড়িকে আটক করে পুলিশ
অবস্থায় তামান্না আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের পর এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বড় ভাই রকিবুল ইসলাম বাদি হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নিহত গৃহবধূ কাঁঠালকান্দি গ্রামের মো. আছদ আলীর ছেলে মো. আব্দুল হামিদ (২৪)-এর স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে স্বামী আব্দুল হামিদ পলাতক রয়েছে।
গৃহবধূর বড় ভাই মামলার বাদি রকিবুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামের আশিক মিয়ার ৪র্থ মেয়ে তামান্না আক্তারের দুই বছর আগে বিয়ে হয়েছিল উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কাঁঠালকান্দি গ্রামের মো. আছদ আলীর ছেলে মো. আব্দুল হামিদ (২৪)-এর সাথে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বাশুড়ি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তার কাছে টাকা দাবি করেন। তামান্নার সুখের কথা ভেবে মাঝে মধ্যে কিছু টাকাও প্রদান করেছেন। কিছু দিন আগে ঘর নির্মাণে সহায়তা হিসেবে নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদানও করা হয়েছে। তার পরও স্বামী হামিদ ও সৎ শ্বাশুড়ি লুৎফা বেগম তামান্নার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালায়। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনের মতো স্বামী ও সৎ শ্বাশুড়ির সাথে তামান্নার তর্কবিতর্ক হয়েছিল। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে স্বামী ও শ্বাশুড়ি মিলে মারধর করেছিল।
গৃহবধূর বড় ভাই মামলার বাদি রকিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন বলেন, স্বামী ও সৎ শ্বাশুড়ি তাকে মেরে সকালে বাড়ির পাশে একটি আম গাছের ডালে গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় রাখছেন। ঘটনার পর থেকে স্বামী আব্দুল হামিদ পলাতক রয়েছে।
দুপুর পর্যন্ত তামান্নার লাশ আম গাছের ডালে ঝুলে থাকলেও তার স্বামী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এমনকি পুলিশকে অবহিত করা হয়নি। গ্রামবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে বিষয়টি কমলগঞ্জ থানাকে অবহিত করলে উপ-পরিদর্শক সুরুজ আলীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। গৃহবধূর বড় ভাই রকিবুল মনে করেন রাতে ঘরের মধ্যে হত্যা করেই পরে সকালে গাছের ডালে ঝুলিয়ে ঘঠনাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছেন।
রকিবুল স্বামী আব্দুল হামিদ ও সৎ শ্বাশুড়ির নাম উল্লেখ করে ঘটনারদিন রাতেই কমলগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই রুফকুল ইসলাম। লিখিত অভিযোগে সৎ শ্বাশুড়ি লুৎফা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান লাশ উদ্ধার ও মামলার ২ নম্বর আসামী সৎ শ্বাশুড়িকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেন। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে এটি আত্মহত্যা না হত্যাকান্ড।