উজিরপুরে ইউপি চেয়ারম্যান নান্টুর হত্যাকারীদের বিচার দাবীতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ ও মানববন্ধন

গৌরনদী প্রতিনিধি//বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু হত্যার ঘটনায় স্থানীয় এমপি এ্যাডভেকেট তালুকদার মোঃ ইউনুসের পিএস ও এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামীলীগ-বিএনপির মোট ৩২ জনকে আসামী করে শনিবার গভীর রাতে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আসামীদের মধ্যে ২৭জন হলেন আওয়ামীলীগের ও ৫ হলেন বিএনপির নেতাকর্মী।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রতিবাদে চেয়ারম্যান নান্টুর সমর্থকদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো উপজেলা। গত ২দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন ও চেয়ারম্যান নান্টুর সমর্থকদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, মানবন্ধন অব্যাহত রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় চেয়ারম্যান নান্টুর শত,শত সমর্থক ও আওয়ামীলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ইচলাদী বাসস্টান্ডে এসে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস.এম জামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস, উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল, গৌরনদী উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আঃ মজিদ সিকদার বাচ্চু, পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন বেপারী, উপজেলা শ্রমিকলীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন খান, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অসিম কুমার ঘরামী। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহন করেন।
অপর দিকে চেয়ারম্যান নান্টু হত্যার ঘটনায় তার পিতা শুকলাল হালদার বাদী হয়ে শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০মিনিটে উজিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য তাইজুর রহমান পান্নুকে ১ নম্বর আসামী করে মামলায় স্থানীয় এমপি এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুসের পিএস সহিদুল হক সাঈদ রাঢ়ী, উপজেলার শোলক ইউপি চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির, জল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জালাল মল্লিক, জল্লা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মামুন শাহ্সহ আওয়ামীলীগ-বিএনপির মোট ৩২ জনকে আসামী করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১নং আসামী তাইজুর রহমান পান্নুসহ হরশিত রায়, আইয়ুব আলী ফরাজী, সাইদুল সিকদার, মন্নান হাওলাদার নামের ৫জন আসামীকে পুলিশ ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালত ওই ৫ আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। হত্যাকান্ডের স্থল উপজেলার কারফা বাজারে বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী গতকাল রোববারও দিনভর মিছিল সমাবেশ ও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছিল। পাশাপাশি এ হত্যাকান্ডের উপযুক্ত বিচার দাবিতে সেখানে তারা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন থেকে বক্তারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উজিরপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবদেন করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য ব্যাপক তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার কারফা বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকে দুস্কৃতিকারীরা বিল গাববাড়ী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শুকলাল হালদারের ছেলে ও জল্লা ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টুকে গুলি করে হত্যা করে।