বহু গুনের ছোলা ক্যন্সার ও ডায়াবেটিকস এর জন্যও উপকারি

0
(0)

 

মোঃ আহছান উল্লাহ ঃ যাত্রা পথে বা কোন পার্ক অথবা অন্য কোনো জায়গায় বেড়াতে গেলে আমরা ছোলা কিনে খাই। এটি যেন সুস্বাদু, তেমনই পেটও ভরে যায়। কিন্তু ছোলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কেউই সেভাবে অবহিত নন। ছোলার গুনের কথা বলা সহজ হলো কিন্তু মাথায় রাখতে হবে এর চাষ পদ্ধতি যেন পরিবেশ সম্মত হয়।
কাঁচা ছোলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১, ও বি ২, খনিজ লবন, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপোযগী ছোলায় আমিষ প্রায় ১৮ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট প্রায় ৬৫ গ্রাম, ফ্যাট মাত্র ৫ গ্রাম, ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘এ’ প্রায় ১৯২ মাইক্রোগ্রাম এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১ ও বি-২ আছে। এছাড়াও ছোলায় বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, খনিজ লবণ, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক উপকার।
উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ছোলা। কাঁচা, সেদ্ধ বা তরকারি রান্না করেও খাওয়া যায়। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে, খোসা ছাড়িয়ে, কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে একই সঙ্গে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করবে।
কাঁচা ছোলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি। যা দীর্ঘক্ষণ ধরে শরীরে শক্তির যোগান দেয়। তবে ছোলার ফ্যাট বেশি তবে এই ফ্যাট শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয়, বরং রক্তের চর্বি কমায়। ছোলা খাওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই হজম হয়। ছোলার আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ছোলায় বেশ ভালো পরিমাণ ফলিক অ্যাসিড থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
ছোলা পুষ্টিকর একটি খাবার। ছোলায় প্রচুর পরিমাণে ফলেট এবং খাদ্য আঁশ আছে সেই সাথে আছে আমিষ, ট্রিপট্যোফান, কপার, ফসফরাস এবং আয়রণ।
খাদ্যনালীতে ক্ষতিকর জীবাণু দূর করে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে ছোলা। ডায়বেটিস আক্রান্তদের জন্য ছোলা খুব উপকারী । যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা অনেক। শ্বাসনালিতে জমে থাকা পুরোনো কাশি বা কফ শুকনো ছোলা ভাজা খেলে ভালো হয় । ছোলা শাকও শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।
আমেরীকা ও অষ্ট্রেলিয়ান গভেষকরা জানিয়েছেন খাবারে ছোলা যুক্ত করলে টোটাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে যায়। ছোলায় দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের খাদ্য আঁশ আছে যা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াার ঝুঁকি কমিযয়ে দেয়। অল্পবয়সী নারীরা বেশি পরিমাণে ফলিক এসিডযুক্ত খাবার খান তাদের হাইপারটেনশন এর প্রবণতা কমে যায়। ছোলায় বেশ পরিমাণ ফলিক এসিড থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। ছোলা বয়সসন্ধি পরবর্তীকালে মেয়েদের হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে। ছোলায় অবস্থিত আইসোফ্লাভন ইস্কেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আর্টারির কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। ছোলা রক্তের চর্বি কমায় ছোলার ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুয়েটেড। এই ফ্যাট শরীরের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয়, বরং রক্তের চর্বি কমায়। ছোলায় সালফার নামক খাদ্য উপাদান থাকায় মাথা গরম হওয়া হাত-পায়ের তালুতে জ্বালাপোড়া কমায় এবং দুর করে মেরুদন্ডের ব্যথা। ত্বক ভালো রাখতেও ছোলা খাওয়া যায়। কাঁচা ছোলাও ভীষণ উপকারী। তবে ছোলার ডালের তৈরি ভাজা-পোড়া খাবার যত কম খাওয়া যায় ভালো। হজমশক্তি বুঝে ছোলা হোক প্রতিটি পরিবারের খাদ্য তালিকার নিয়মিত পথ্য।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.