স্বরূপকাঠিতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

হযরত আলী হিরু, পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির সমুদয়কাঠি ইউনিয়নের শশীদ অশ্বত্থকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুইটি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কামিটির সভাপতি থাকার পরেও ক্ষমতার দাপটে শশীদ অশ্বত্থকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বলে দাবী করেছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম,কে সবুর তালুকদার। ওই বিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে দুইজন অভিভাবক সদস্য একজন দাতা সদস্য একজন শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ২৬ আগষ্ট ২০১৮ ইং তারিখে অভিভাবক, শিক্ষকদের ভোটে ৯ জন সদস্য নির্বাচিত হন। অভিভাবক সদস্যদের অভিযোগ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তারা প্রিজাইডিং অফিসারের সভাপতিত্বে গত ৩০ আগষ্ট বিদ্যালয়ে সভায় মিলিত হন। এবং ৬-৩ ভোটে বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জহর লাল বড়াল নির্বাচিত হন। এ ফল ঘোষনার আগেই উক্ত সভায় বাচ্চু ঘরামী নামে একজন সদস্য উপস্থিত না থাকার অজুহাতে চেয়ারম্যান সবুর তালুকদার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় হট্টগোল সৃষ্টি করে সভা পন্ড করেন। পরে নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা সহকারী প্রেগ্রাম অফিসার মো. বিল¬াল হোসেন ১ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকালে বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচনে পূনরায় সভা আহবানের ঘোষণা দিয়ে চলেযান। ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার প্রিজাইডিং অফিসার ছাড়াই বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচনে পূনরায় সভা বসান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। সেখানেও শিক্ষক প্রতিনিধি নিলীমা অনুপস্থিত থাকার পরেও কোন নিয়ম ছাড়াই সভা শুরু করে ৮ জন সদস্যদের নিয়ে একটি ভোটের পর্ব শুরু করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এতে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জহর লাল বড়াল ও ইউপি চেয়ারম্যান কেএম সবুর তালুকদার ৪ টি করে ভোট পান। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কমিটির সদস্য না হয়েও তিনি কাষ্টিং ভোটের নাম করে ভোট প্রদান করে ইউপি চেয়ারম্যান সবুর তালুকদারকে সভাপতি ঘোষনা করেন। কেএম সবুর তালুকদার বর্তমানে দুর্গাকাঠি ও মৈশানী বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি। তার সভাপতিত্বে ওই বিদ্যালয় দুটিতে করুন অবস্থা বিরাজ করছে। আগষ্ট মাসের প্রথম দিকে দূর্গাকাঠিতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে উপজেলা সদরে মানববন্ধন করেছে অভিভাবক ও এলাকাবাসী। অপর দিকে মৈশানী বালিকা বিদ্যালয়ে দিন দিন ছাত্রী সংখ্যা হৃাস পেয়ে পাঁচ শ্রেনীতে সর্বমোট ১২/১৩ জনে ঠেকেছে। ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারীর চেয়েও ছাত্রী সংখ্যা কম। এ দুটি বিদ্যালয়ের ব্যাপারে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নানা প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান এম,কে সবুর তালুকদার বলেন, সুষ্ঠ ভাবে পহেলা সেপ্টম্বর বিদ্যালয়ে একাংশ অভিভাবক সদস্যর সম্মতিক্রমে আমি সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছি। কোন সমস্যা হয়নি। বাকি সব সামনা সামনি বলব বলে ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে ওই নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী প্রোগ্রামার মো. বিল্ল¬াল হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন ৩০ আগষ্ট শশীদ অশ্বত্থকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে প্রথম সভা করেছেন। গন্ডগোলের কারনে হুমকি থাকায় সভাপতি নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। ২ দিন পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সভা করে রেজুলেশন তৈরি করে নিয়ে আসলে ৩০ আগষ্ট তারিখ দিয়ে স্বাক্ষর করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ বলেন, এখন পর্যন্ত প্রিজাইডিং অফিসার কোন রিপোর্ট করেননি। বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগ পেয়েছেন। সদস্যদের আবেদন এখনো হাতে পাননি। পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনগত ভাবে সভাপতি নির্বাচন হয়েছে কিনা ক্ষতিয়ে দেখা হবে।