মো: মাসুম বিল্লাহ//দুই দশক ধরেই ইংল্যান্ডের ধনী-গরীবের মধ্যে গড় আয়ুর বৈষম্য বাড়ছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানাচ্ছে, এই নগরীতে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে আয়ুতেও ফারাক তৈরি হয়েছে। স্টকটনে ধনীদের আয়ু বাড়ছে। তারা পাচ্ছেন দীর্ঘ জীবন। কিন্তু গরীবদের আয়ু তেমন বাড়ছে না। তাদের বেশিরভাগই মারা যাচ্ছেন অল্প বয়সে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে স্টকটনেরই বাসিন্দা রব হিল। স্ত্রী ও আট সন্তানকে রেখে মাত্র ৪৬ বছর বয়সেই তিনি এখন নিজের মৃত্যুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একদিকে তিনি সারাজীবন ধরে সিগেরেট খেয়েছেন। অন্যদিকে, দারিদ্রের কারণে সব সময়ই খেয়েছেন সস্তা ও নিম্নমানের খাবার।
সব মিলিয়ে হিলের শরীরে বাসা বেঁধেছে রোগ-বালাই। তার আছে এম্ফিসেমা, লিম্ফিডেমা ও টাইপ-২ ধরণের ডায়াবেটিস। আরো দুই বছর আগেই ডাক্তাররা তাকে মাস ছয়েক সময় বেধেঁ দিয়েছিলেন। তাই, আক্ষরিক অর্থেই এখন তিনি বেঁচে আছেন বাড়তি আয়ুর বদৌলতে। জানা যাচ্ছে, স্টকটনে গরীবের চেয়ে ধনীর আয়ু অন্তত ১৮ বছর বেশি। এই বিভক্তি ও বৈষম্য যুক্তরাজ্যের একটি জাতীয় সমস্যা। গত দুই দশক ধরে আয়ুর এই বৈষম্য বাড়ছে।জাতীয় হিসেব মতে, ইংল্যান্ডের ধনী পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুরা অপেক্ষাকৃত গরবী পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুদের চেয়ে গড়ে সাড়ে আট বছর বেশি বাঁচে। স্টকটন শহরের ডাক্তার ডেভিড হজসন বলছেন, এশহরে পুরুষের গড় আয়ুর প্রত্যাশা মোটে ৬৪ বছর। এটি মূলত আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার সমান। কিন্তু শহরটিতে ধনী-গরীবের আয়ুর ক্ষেত্রে কেন এতো বৈষম্য?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গত ৫ বছর ধরে একটি গবেষণা করেছেন অধ্যাপক ক্লেয়ার বামব্রা। এই গবেষণার তথ্য বলছে, আয়ুর ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হবার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকলেও মূল কারণ আয়-বৈষম্য। আয়ুর এই বৈষম্য কমাতে দেশটির সরকার বদ্ধ পরিকর বলেও জানিয়েছে।বার্নি রিজি-এলান, সেন্ট বেড’স ক্যাথলিক একাডেমির প্রধান। তিনি বলছিলেন, মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ও শ্র্রেণীর বিভেদ দিয়ে মানুষের আয়ু নিরুপন হওয়া ঠিক নয়। এই বৈষম্য অবশ্যই কমানো সম্ভব এবং এটি কমবেও।