গৌরনদীতে ছাত্রদল নেতাকে মারধর করে পকেটে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার অভিযোগ

গৌরনদী প্রতিনিধি//
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল এলাকায় স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে নামিয়ে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিয়াল (২২) নামের এক ছাত্রদল নেতাকে বেদম মারধর করে তার পকেটে ৪পিস ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরিকল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মৃধা অভিযোগ করেন, কিছুদিন পূর্বে একই গ্রামের নাসির মোল্লা, আজিজুল মোল্লাদের সাথে তাদের মারামারি হয়। ওই ঘটনায় নাসির মোল্লা বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বর্তমানে তারা জামিনে আছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তি বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে আগরপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে একটি যাত্রীবাহী লোকাল বাসে চড়ে সরিকলে ফিরছিলেন তার ছেলে রনি মৃধা (১৮) ও আগরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিয়াল (২২)। সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে তাদের বহনকারী লোকাল বাসটি সরিকল গ্রামের নাসির মোল্লা’র বাড়ির সামনে আসলে প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগ নেতা নাসির মোল্লা, আজিজুল মোল্লা’র নেতৃত্বে ১৫/১৬ জন লোক রনি মৃধা ও পিয়ালকে লোকাল বাস থেকে টেনে হেচড়ে নামিয়ে মারধর করে। এক পর্যায়ে রনি মৃধা সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পায়। অপর দিকে পিয়ালকে ধরে তারা বেদম মারধোর করে তার পকেটে ৪পিস ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে সরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে সোপর্দ করে।
পিয়ালকে মারধর করা ও ইয়াবা দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামীলীগ নেতা নাসির মোল্লা বলেন, আমি ঘটনাস্থলেই ছিলাম না। আমি তখন সরিকল বাজারে অবস্থান করছিলাম। মোবাইল ফোনে লোক মারফত খবর পাই যে, জাহাঙ্গীর মৃধার ছেলে রনি মৃধা ও পিয়াল ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে যাচ্ছে এ খবর পেয়ে এলাকাবাসী বাস থামিয়ে তাদেরকে ধরার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাস থামাতে দেখে ইয়াবার বড় চালানটি নিয়ে বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে রনি মৃধা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর তারা পিয়ালকে ৪পিস ইয়াবাসহ আটক করে রেখে সামান্য মারধর করে। আমি ফোনেই তাদেরকে মারধর করতে নিষেধ করি। বলি তোমরা পুলিশে খবর দিয়ে ওকে তাদের হাতে তুলে দাও। তারাই আইনগত ব্যাবস্থা নেবে। এলাকাবাসীর অনুরোধে পরে আমি ঘটনাস্থলে যাই। তখন গৌরনদী মডেল থানাকে খবর দেয়া হলে থানার ওসি সরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই ইকবাল হোসেনকে ঘটনা স্থলে পাঠান। পরে এলাকাবাসী তাকে এসআই ইকবাল হোসেনের হাতে তুলে দেয়।
সরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই ইকবাল হোসেন জানান, গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাহেবের ফোন পেয়ে ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমি ঘটনাস্থল সুবল পালের বাড়ির সামনে যাই। গিয়ে দেখি ২০/২৫ জন লোক জড়ো হয়ে আছে। তারা অভিযুক্ত পিয়ালকে মারধোর করে ধরে রেখেছে। আমি উপস্থিত লোকজনের সামনে পিয়ালের পকেট সার্সকরে ৪ পিস ইয়াবা পাই। এরপর উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে তাদের নির্দেশ মোতাবেক পিয়ালকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করাই এবং পরবর্তিতে তার বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা দিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করি।