গৌরনদীতে কলেজ পিয়নের হাতে মসজিদের ইমাম লাঞ্চিত ক্ষুব্দ এলাকাবাসী

গৌরনদী প্রতিনিধি//
নিজের প্রভাব জাহির করতে বরিশালের গৌরনদীতে একটি কলেজের পিয়ন তার গ্রামের জামে মসজিদের এক উচ্চ শিক্ষত ইমাম সাহেবকে লাঞ্চিত করে মসজিদ থেকে বের করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। নিজের ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে বিনা অপরাধে ইমাম সাহেবকে লাঞ্চিত করে বের দেয়ার ঘটনায় ক্ষুব্দ স্থানীয় মুসল্লীরা গত ৬দিন ধরে ওই মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছেন না। এর পরও টনক নড়ছেনা ওই কলেজ পিয়নের। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মধ্য বেজহার গ্রামে।
ওই গ্রামের নুরুল আমিন মাতুব্বর, বাবুল খলিফা, শাহজাহান মোল্লা, দেলোয়ার খলিফা, মজিবর মাতুব্বর, জাহাঙ্গীর খলিফা জানান, তাদের গ্রামের দীর্ঘদিনের পুরানো মসজিদটি হল মধ্য বেজহার জামে মসজিদ। গত আড়াই বছর ধরে ওই মসজিদের ইমাম হিসেবে কাজ করে আসছেন মাওলানা আব্দুর রহমান। মাদ্রাসা শিক্ষার পাশাপাশি সাধারন শিক্ষায় অনার্সসহ মাষ্টার্স ডিগ্রীধারী মাওলানা আব্দুর রহমান ওই এলাকার সকলের কাছে একজন নিরিহ ও বিনয়ী মানুষ হিসেবেই পরিচিত। এলাকায় তার কোন বদনাম নেই। ওই মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলার মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজের পিয়ন মোঃ ফারুক চোকদার শুধুমাত্র তার নিজের প্রভাব দেখাতে গত ৩ আগষ্ট শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি আলী আহাম্মেদ চোকদার ও তার ভাই সিরাজুল ইসলাম চোকদার এবং চাচাতো ভাই রহমতুল্লাহ চোকদারসহ তাদের প্রতিবেশী পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত মাঠকর্মী আব্দুল মালেক হাওলাদারকে সাথে নিয়ে মসজিদে ঢুকে মাওলানা আব্দুর রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করে মসজিদ থেকে বের করে দেয়। এ সময় মাওলানা আব্দুর রহমান মসজিদের এক কোনে বসে সুবর্না (৭) নামের দ্বিতীয় শ্রেনীর এক শিশু ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন। ফারুক চোকদার তখন শিশু ছাত্রীকে পড়ানোর টেবিলটির ওপর সজোরে লাথি মারে। এতে টেবিল চেয়ারসহ পড়ে গিয়ে শিশুছাত্রী সুবর্না মাথায় আঘাত পায়। ঘটনা টের পেয়ে এলাকাবাসী ও অন্যান্য মুল্লীরা সেখানে ছুটে এসে ইমাম সাহেবকে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদ করেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ পর্যায়ে মুসল্লীরা ইমামকে লাঞ্চিত করার ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ওই মসজিদে নামাজ পাড়তে যাবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে চলে যান।
ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান বলেন, শুনেছি গত শুক্রবার সকালে আমাকে লাঞ্চিত করে বের করে দেয়ার পর থেকে এ যাবত স্থানীয় মুসল্লীরেদর কেউ আর ওই মসজিদে নামাজ আদায় করতে যায়নি। আমাকে লাঞ্চিত করা ফারুক চোকদার ও তার সহযোগী ওই ৫ ব্যাক্তিই এখন ওই মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য যান। এলাকার অন্য কাউকে তারা সাথে পাচ্ছেন না। নিজের ক্ষমতা ও প্রভার জাহিরের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজের পিয়ন মোঃ ফারুক চোকদার বলেন, আমি বা আমরা এলাকার কোন প্রভাবশালী নই, আমরা কোন প্রভাবও দেখাইনা। ইমাম সাহেব ঠিকমত ডিউটি না করায় আমরা তার পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে তাকে বিদায় দিয়েছি। তার পরও তিনি মসজিদের ভেতরে বসে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন। এটা নিষেধ করায় আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এ সময় ইমাম সাহেবকে লাঞ্চিত করার ঘটনাটি তিনি অস্বীকার করেন।