উজিরপুরের আলোচিত ধর্ষণ প্রচেষ্টা মামলা থেকে বেকসুর খালাস অভিযুক্তরা

0
(0)

গৌরনদী প্রতিনিধি//
উজিরপুর উপজেলার বাহেরঘাটের আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন অভিযুক্তরা। প্রায় ৮ বছরের মাথায় গত রোববার বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল (মোকদ্দমা নং ২৬৭/১২) মামলার সাক্ষ্য প্রমানিত না হওয়ায় আসামিদের বেকসুর খালাস দেন।
বিগত ২০১১ সালের নভেম্বরে উজিরপুর উপজেলার মজম গ্রামের বাসিন্দা বাহেরঘাটের এক মাদ্রাসা ছাত্রী উজিরপুর থানায় একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা (নং ৩০) দায়ের করেন। এতে স্থানীয় ৩ যুবককে আসামি করা হয়। এর মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত ছিলো রাব্বি। যিনি দূরসম্পর্কে বাদীর ভাতিজা। ঘটনার সময় রাব্বির বয়স ছিলো মাত্র ১৬’র কোঠায়। যা ভূক্তভোগি ছাত্রীর চেয়ে অনেক কম। মামলায় উল্লেখ করা হয় ঘটনার দিন সন্ধ্যায় রাব্বি ভূক্তভোগি ওই ছাত্রীকে চুমু দিয়েছে। এ নিয়ে তখন পত্র পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি তখন এলাকায় আলোচিত হয়ে ওঠে। প্রধান অভিযুক্ত রাব্বির পারিবারিক ঐহিত্যকে হেয় করাসহ অর্থনৈতিক ফায়দা লুটতে স্থানীয় একটি চক্র উঠে পড়ে লাগে। ষড়যন্ত্রের শিকার বুঝতে পেরে রাব্বির বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা সেলিম রেজা নিজের নাবালক (তখন) ছেলেকে আদালতে সোপর্দ করেন। জামিন পান রাব্বি। এরপর বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে পুলিশ। অভিযুক্তদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, এডভোকেট দেবাশিষ দাস। তিনি জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালকে সাক্ষির সাক্ষ্য প্রমানিত না হওয়ায় রাব্বিসহ সকল আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
এ বিষয়ে গতকাল কথা হয় পবিত্র হজ পালনে মক্কায় অবস্থানরত রাব্বির মা মাজেদা পারভীন ও বাবা সেলিম রেজার সাথে। তারা প্রথমেই ছেলে নির্দোষ প্রমানিত হওয়ায় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া প্রকাশ করেন। পরে বলেন, তাদের বিশ^াস ছিলো রাব্বির সম্পর্কে ফুফুকে জড়িয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়। এতটা নিচু মানষিকতার ছেলে রাব্বি নয়। স্থানীয় গুটি কতক লোক এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে। বিভিন্ন মিডিয়াকে ভুল তথ্য দিয়েছে। মেয়েটির বাবাও পরে ভুলের বিষয়টি বুঝতে পেরে লজ্জা পেয়েছেন। দুংখ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ততদিনেতো আমাদের অনেক সর্বনাস হয়ে গেলো। মামলা চলমান থাকায় ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় বিদেশ পাঠাইনি। অনেক হয়রানি পোহাতে হয়েছে। তবুও অবশেষে সত্য প্রমানিত হয়েছি। এতেই খুশি।
এদিকে যাকে নিয়ে বিষয়টি বহুল আলোচিত হয়েছে ৮ বছর আগের সেই রাব্বি আজ ঢাকার মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজধানীতে। ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের ছাত্র ছিলাম। তখন কেবল কলেজে ভর্তি হয়েছি। বাবার ওপর অভিমান করে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাই। পরে বুঝতে পারি ভিলেজ পলিটিক্্র কি জিনিস! ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে দীর্ঘ দিন আমাকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। ঢাকা থেকে বরিশাল গিয়ে হাজিরা দিতে হয়েছে। তবে যেহেতু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি তাই সবকিছু ক্ষমা করে দিয়েছি। অন্যথায় মানহানি ও ক্ষতিপুরনের মামলা করতাম। সৌদিয়া মার্কেটে আলাপকালে রাব্বির এক চাচা বলেন, ২০১১ সালের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের ঘটনা। মামলার বাদী ওই ছাত্রীকে তার বোনের দেবর লিয়নের সঙ্গে একান্ত অবস্থায় দেখতে পায় রাব্বি। প্রতিবাদি চরিত্রের ছেলে রাব্বি বিষয়টি তখন ছাত্রীর ভাই নবীনকে অবহিত করে। ভাই তার বোনকে মারধর করে। পাশাপাশি লিয়নকে মেরে রক্তাক্ত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয় ওই ছাত্রী। প্রতিশোধ এবং নিজের কৃতকর্ম আড়াল করতে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ এনে রাব্বিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসায় ওই ছাত্রী। এলাকার সবাই জানে বিষয়টি ষড়যন্ত্রমূলক। কিন্তু আইনের ওপরেতো কারো হাত নেই। তাই আমরা আইনের প্রতি শ্রব্দাশীল হয়ে সময়ের অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে আজ সত্য উদঘাটন হয়েছে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.