আগৈলঝাড়ায় ইভটিজারদের মোটরসাইকেল চাঁপায় স্কুলছাত্রী নিহত

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ইভটিজারদের বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অকালে ঝড়ে গেলে এক মেধাবী ছাত্রীর প্রাণ। উপজেলার পূর্ব পয়সা গ্রামের টিএম নজরুল ইসলামের মেয়ে ও গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ১০ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী মেনহাজ হাসান মিলি। আইসিইউ’তে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬০ ঘন্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গতকাল শুক্রবার সকালে মারা গেছে। এঘটনায় মিলির স্কুলের শিক্ষক, সহপাঠিসহ এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত মিলির বাবা টিএম নজরুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে তিনি উপজেলা সদর থেকে তার মেয়ে মিলিকে ডাক্তার দেখিয়ে মাহেন্দ্র যোগে সন্ধ্যার সময় নিজের বাড়ির সামনে নেমে ভাড়া পরিশোধ করছিলেন। মিলি রাস্তা পার হয়ে দক্ষিণপাড়ে দাড়িয়েছিল। ওই রাস্তা দিয়ে পাঁচটি মোটর সাইকেল নিয়ে বেপারোয়া গতিতে যাবার সময় মোটরসাইকেলে থাকা ইভটিজারা মিলিকে কুরুচিপূর্ণ বাক্যছুড়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এসময় মিলি মোটরসাইকেলের নিচে পরে গুরুতর আহত হয় এবং মুহুর্তের মধ্যে মিলির নাক-কান দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। এসময় ইফটিজার মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা মিলিকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তার তাকে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। মঙ্গলবার রাতেই স্থানীয় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র উদ্যোগে মিলিকে বরিশাল শেবাচিম হাসাপাতালের আইসিইউ’তে ভর্তি করা হয়। আইসিইউ’তে চিকিৎসকদের নিবির পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার দশটার দিকে মিলি মারা যায়। মিলি পয়সা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জেএসসি’তে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। পয়সা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক না থাকায় গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। মিলি পড়ালেখা করে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল। নিহত মিলির চাচা জব্বার তালুকদার জানান, ইভটিজারদের ফেলে যাওয়া বরিশালে রেজিষ্ট্রেশন করতে দেয়া মোটরসাইকেলের কাগজ অনুযায়ী মালিকের নাম রিফাত আকন, পিতা আতাহার আকন। তার বাড়ি মুলাদি উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের টুমচর গ্রামে। রিফাত প্যাসিফিক ফার্মাসিউটিক্যাল লিঃ নামে ঔষধ কোম্পানীতে উজিরপুর উপজেলায় কর্মরত রয়েছে। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা জানান, তিনি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এসআই জাহিদুর রহমান ও এএসআই রাজু আহম্মেদকে পৃথকভাবে মোটরসাইকেলটি থানায় আনা ও মামলা করার জন্য পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু তারা মোটরসাইকেলটি পুলিশের কাছে দেয়নি। এঘটনায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি। মিলির মৃত্যুতে গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকরা শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছে।