রাজু ফকির,স্টাফ রিপোর্টার//
ম্যাচের পর আন্তোয়ান গ্রিয়েজমান বললেন, ‘আমরা যে কি করেছি, সেটা নিজেরাই বুঝে উঠতে পারছি না। আমি এই দলের খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ সবাইকে নিয়েই গর্ববোধ করছি। আমরা এক অসাধ্য সাধন করেছি। আমরা ইতিহাস গড়েছি, এখন আনন্দটা উপভোগ করব। আমরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করব আর উৎসবে মাতব। আগামীকাল (আজ) ফ্রান্সেও তাই হবে, আমরা ফরাসি জনগণের সঙ্গে উৎসবে মাতব।’ অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন সিন নদীর পাড়ে। ভোলগার তীরে জিতলেন কোচ হিসেবে, দিদিয়ের দেশম এই অনন্য কীর্তির পর জানালেন, ‘আমাদের এই দলটা খুবই তরুণ। ১৪ জন ফুটবলারকেই আমরা বিশ্বকাপ অভিযাত্রায় আবিষ্কার করেছি। কিন্তু তাদের মধ্যে সেই প্রতিভা ছিল। আমার সবচেয়ে বড় গর্বের জায়গাটা হচ্ছে—আমি গোটা টুর্নামেন্টে তাদের মনের সঠিক গড়নটা ধরে রাখতে পেরেছি। আমি তাদের বারবার বুঝিয়েছি, কখনো হাল ছেড় না।’ ভাগ্যচক্রে আত্মঘাতী গোল ও ভিএআর সিদ্ধান্তে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল, দেশমের দিকে এই সমালোচনার তীরও হয়তো আসবে। আগেই দেশম বলে দিলেন, ‘আমাদের ভেতর খুত ছিল এবং আজও (কাল) আমাদের সব কিছু ঠিকঠাক হয়নি। তবে আমাদের সেই শারীরিক ও মানসিক সামর্থ্য ছিল যেটা এই বিশ্বকাপে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। এই ফাইনালের প্রথমার্ধে আমরা ভালো খেলিনি, তবুও ২-১ গোলে এগিয়ে ছিলাম। তাই প্রশ্ন উঠবেই, ফ্রান্স কি সুন্দর খেলে চ্যাম্পিয়ন হলো। আমি বলি, ফ্রান্স এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এবং আগামী চার বছর তাই থাকবে। এটাই লোকে মনে রাখবে।’
ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো দালিচ ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘আমি ফ্রান্সকে শিরোপা জয়ের অভিনন্দন জানাই। আমরা ফাইনালের প্রথম ২০ মিনিট ভালো খেলেছি। আমরাই খেলা নিয়ন্ত্রণ করছিলাম। এরপর সেট পিস থেকে আত্মঘাতী গোল। এর পরও আমরা খেলায় ফিরেছিলাম, গোল করে সমতাও ফিরিয়েছিলাম। তারপর সেই পেনাল্টি। আমি খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানাতে চাই, হয়তো তারা আসরের সেরা ম্যাচটা খেলেছে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আমাদের কাছেই ছিল, কিন্তু আমরা গোল বেশি খেয়েছি। ফ্রান্সের মতো একটা শক্তিশালী দলের বিপক্ষে আসলে ভুল করা চলবে না। আমাদের খানিকটা খারাপ লাগছে, তবে আমরা যা অর্জন করেছি তার জন্য আমরা গর্বিত।’ ইভান রাকিটিচের কণ্ঠেও সেই আক্ষেপ, ‘প্রথমার্ধে আমরাই ছিলাম সেরা দল। আমরাই আক্রমণ করছিলাম। তবে এই রাতটা আমাদের দুর্ভাগ্যজনকই কেটেছে। তারা গোলে শট নিয়েছে তিনটা আর গোল করেছে চারটা। আমি ফ্রান্সকে অভিনন্দন জানাই, শিরোপা তাদেরই প্রাপ্য।’
জয়ের পর ড্রেসিং রুমে ফিরেই মুঠোফোনগুলো হাতে তুলে নিয়েছেন ফরাসি ফুটবলাররা। টুইটারে একের পর এক ছবি আপলোড করা চলছে! বেঞ্জামিন মেন্দি, এনগোলো কান্তে, স্যামুয়েল উমতিতি, বেঞ্জামিন পাভার্দ সবাই বিশ্বকাপটা হাতে নিয়ে ছবি দিয়েছেন টুইটারে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো অভিনন্দন জানিয়েছেন ফ্রান্স ফুটবল দলকে। গোল্ডেন বল হাতে ড্রেসিংরুমে মডরিচের সঙ্গে ছবি দিয়ে রাকিটিচ টুইটারে লিখেছেন, ‘ভাই মডরিচ, আমি জানি না তোমাকে নিয়ে কতটা গর্বিত আমি। এই সম্মান তোমারই প্রাপ্য। এখন চল আমাদের পরিবার আর ক্রোয়েশিয়ার সবার সঙ্গে এই আনন্দ উপভোগ করি।’