স্বরূপকাঠি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ প্রতিনিধি ও দালালদের দৌরাত্ব

0
(0)

হযরত আলী হিরু,পিরোজপুর ॥
পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি (রিপ্রেজেন্টেটিভ) এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের দালালদের দৌরাত্বে চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। বার বার এ নিয়ে বিভিন্ন দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের উদাসিনতার কারনে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি এবং দালালরা বহাল তবিয়তে থেকে তাদের অপকর্র্ম করেই চলছে। বিভিন্ন সময় সরেজমিনে হাসপাতালটিতে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ডাক্তারদের চেম্বারে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। চেম্বারে রোগীদের বসার চেয়ার থেকে শুরু করে রোগীদের সোয়ার সিট পর্যন্ত তাদের দখলে। এদের বেশিরভাগই মানহীন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি। কোন কোন প্রতিনিধি রোগীদের হাত থেকে ব্যবস্থাপত্রটি নিয়ে নিজের মোবাইলে ছবি তুলছেন। ডাক্তারদের চেম্বারের দরজা ও হাসপাতালের গেটে দাড়িয়ে থাকেন স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের ২৫/৩০ জন মহিলা দালাল । রোগীরা ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে রোগীদের হাত থেকে পরিক্ষাপত্রটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় দালালেরা। শুধুু পরিক্ষাপত্রই নয় রোগীদেরকে নিয়েও টানা হেচড়া করেন তারা। এ নিয়ে দালালরা নিজেদের মাঝে ঝগড়ার একপর্যায়ে হাতাহাতি পর্যন্ত করেন। কোন রোগী এর প্রতিবাদ করলে তাকে শুধু দূুর্ব্যবহারই নয় শারিরীকভাবেও লাঞ্ছিত করে তারা। এমনি এক দালাল লিয়া যিনি কিছদিন পূর্বে সোহাগদল এলাকার এক মহিলা রোগীকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করে প্রায় অর্ধ বিবস্ত্র করে ফেলেন। এর পূর্বে সে একজন ডাক্তাকেও লাঞ্চিত করেছিলেন। রোগী টানা হেচড়া নিয়ে লিয়ার হাতে মহিলা দালাল পারভীন, আসমা, পেয়ারা, নাসিমা সহ সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ইলুহার গ্রামের জসীম উদ্দিনের স্ত্রী গর্ভবতি রোগী নাসিমা নামের একজনকে মেরে তার গায়ে ইট নিক্ষেপ করে লিয়া। পরে অন্য রোগীদের সহায়তায় রক্ষা পায় নাসিমা। লিয়ার দূুর্ব্যবহারের কারনে কেউ তার প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রয়েছে বকশিষ বানিজ্যের অভিযোগ । এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. তানভীর আহম্মেদ সিকদার জানান, ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি এবং দালালদের নিয়ন্ত্রনের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু কোনভাবেই তাদের নিয়ন্ত্রন করতে পারছিনা। এ ছাড়া হাসপাতালে ২০ জন ডাক্তারের স্থলে ডাক্তার রয়েছে মাত্র ৮ জন। মেডিসিন, গাইনী, এ্যানেস্থেসীয়া, জেনারেল সার্জন, শিশু কনসালটেন্ট, এক্স-রে টেকনিশিয়ান ও ডেন্টাল সার্জন নেই বলে তিনি জানান। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের দেয়া খাবারে চলছে চরম অনিয়ম। সকালে খাবারে ৯ টাকা দামের সবরি অথবা সাগর কলা ও ১৫ টাকা দামের পাউরুটি দেয়ার নিয়ম থাকলেও দেয়া হচ্ছে নষ্ট ও পচে যাওয়া ২/৩ টাকা দামের কাঠালী কলা এবং ৫ টাকা দামের বনরুটি। দুপুরে খাবারের তালিকায় রুই ,কাতলা, তেলাপিয়ার কথা থাকলেও প্রতিদিন দেয়া হচ্ছে কম দামের পাঙ্গাস মাছ। এ ছাড়াও অন্যান্য খাবারও যা দেয়া হচ্ছে তা অনেকটাই মানহীন। যা খেতে রোগীরা প্রতিনিয়ত অনীহা প্রকাশ করে। কোন রোগী এর প্রতিবাদ কররে তাকে নাজেহাল হতে হচ্ছে। পরে বিষয়টি নিয়ে পিরোজপুর জেলা প্রসাষক আবু আহমদ সিদ্দিকী জানান, এ ব্যাপারে অতি শীগ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য ইউএনওকে বলা হয়েছে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.