0
(0)

হাসান বিন নোমান//
স্বামী -স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কী সমস্যা হয়। রক্তের গ্রুপ একই হলে নাকি বাচ্চার জন্মগত সমস্যা হয়? প্রায় প্রতিদিন এই প্রশ্নটা অহরহ শুনে থাকেন চিকিৎসকরা। অনেকের মধ্যে এমন অজানা একটি প্রশ্ন ভর করে। যা নিয়ে তারা অযথা দুশ্চিন্তাগ্রস্তও থাকেন। কিন্তু ডাক্তারদের মতে, “কোনো সমস্যাই হয় না।’
সারা দুনিয়ায় ৩৬ শতাংশ “ও” গ্রুপ, ২৮ ভাগ “এ” গ্রুপ, ২০ শতাংশ “বি” গ্রুপ। কিন্তু এশিয়াতে প্রায় ৪৬ ভাগ মানুষের রক্তের গ্রুপ “বি”। এশিয়ায় নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপ ৫ শতাংশ, সেখানে ইউরোপ আমেরিকাতে প্রায় ১৫ শতাংশ।
যেখানে উপমহাদেশে সিংহভাগ মানুষের রক্তের গ্রুপ ‘বি’। সেখানে স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপের মিল হবে সেটাই স্বাভাবিক। এতে কোনো সমস্যা হয় না। অনেকের ভ্রান্ত ধারণা- বাবা মায়ের রক্তের গ্রুপ এক হলে বাচ্চার থ্যালাসেমিয়া হয়। এটাও সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ, থ্যালাসেমিয়া রোগ ক্রোমোজোম এবনরমালিটি থেকে হয়।
স্বামীর রক্তের গ্রুপ পজেটিভ এবং স্ত্রীর নেগেটিভ হলে কী হতে পারে

স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে কোনো সমস্যা হয় না। তবে স্ত্রী যদি নেগেটিভ হয় আর স্বামী যদি পজেটিভ হয় তাহলে ‘লিথান জিন’ বা ‘মারণ জিন’ নাকে একটি জিন তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে জাইগোট তৈরিতে বাধা দেয় বা জাইগোট মেরে ফেলে। সেক্ষেত্রে মৃত বাচ্চার জন্ম হতে পারে। বাচ্চা হতে পারে জন্মান্ধ। এছাড়া যখন কোনো নেগেটিভ গ্রুপের মা পজেটিভ ফিটাস (ভ্রুণ) ধারণ করে তখন সাধারণত প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু ডেলিভারির সময় পজেটিভ ভ্রুণের রক্ত, প্লাসেন্টারের (গর্ভফুল) বাধা ভেদ করে মায়ের শরীরে প্রবেশ করবে। মায়ের শরীরেও প্রসবের সময় যে রক্ত প্রবেশ করবে, তা প্রসবের কয়েক মাসের মধ্যেই মায়ের শরীরে আরএইচ এন্টিবডি তৈরি করবে।

যখন মা দ্বিতীয় সন্তান বহন করবেন, তখন যদি তার ভ্রূণের ব্লাডগ্রুপ আবার পজেটিভ হয়, তাহলে মায়ের শরীরে আগে যে এন্টিবডি তৈরি হয়েছিল সেটা প্লাসেন্টার বাধা ভেদ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করবে। আর যখন এটি ভ্রূণের শরীরে ঢুকবে তখন ভ্রূণের লোহিত রক্ত কনিকার সেল ভেঙে যাবে। এ সমস্যাকে চিকিৎসা বিদ্যায় বলা হয় আরএইচ ইনকমপ্যাটিবিলিট।

আগে কখনও অপারেশন না হয়ে থাকলে অনেক সমস্যা এড়ানো যাবে। শুধু সচেতন থাকতে হবে। স্বামীর ব্লাডগ্রুপ পজেটিভ হলে, বাচ্চা জন্মের পরপরই বাচ্চার ব্লাডগ্রুপ পরীক্ষা করতে হবে। যদি নেগেটিভ হয় মায়ের মতো, তবে কিছু করার দরকার হয় না। আর পজেটিভ হলে এন্টি ডি ইনজেকশন নিতে হবে ডেলিভারির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। আরও বিস্তারিত জানতে এবং বাচ্চা ধারণের আগেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.