কমলগঞ্জে ধলাই নদী ভাঙনে পানিবন্দি অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষ

জয়নাল আবেদীন, কমলগঞ্জ সংবাদদাতা//
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর ৮ স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের ত্রিপুরাসহ উজানের পাহাড়ি এলাকা থেকে ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ধলাই নদীর ভাঙনে ৫০টি গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মৌলভীবাজার-কমলগঞ্জ ও আদমপুর সড়ক নিমজ্জিত হওয়ায় যানচলাচলে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। মুন্সীবাজার ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনদিনের টানা বর্ষনে ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। মঙ্গলবার দুপুর থেকে ধলাই নদীর করিমপুর, নাজাতকোনা, ঘোড়ামারা, লক্ষীপুর, কেওয়াঘাট, সুরানন্দপুর, কাঠাবিল, বাদেকরিমপুর এলাকায় নতুন ও পুরনো ভাঙন দিয়ে পানি বেরিয়ে প্লাবিত হচ্ছে বিস্তির্ন এলাকা। ফলে বন্যায় নিমজ্জিত হচ্ছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট। বুধবার সকাল থেকে মৌলভীবাজার-কমলগঞ্জ উপজেলা ও আদমপুর সড়কে হাটুপানি হওয়ায় যান চলাচলে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বন্যায় উপজেলার ইসলামপুর, আদমপুর, মাধবপুর, কমলগঞ্জ পৌরসভা, আলীনগর, রহিমপুর, মুন্সীবাজার, শমশেরনগর ও পতনঊষার ইউনিয়নের ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি এলাকায় উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার উদ্যোগের শুকনো খাবার বিতরন করা হচ্ছে।
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমদ বলেন, করিমপুর এলাকায় নদীর ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করায় পৌর এলাকার গোপাল নগর, করিমপুর, যুদ্ধাপুর ও নাগরা গ্রামের চারশ পরিবার এবং মুন্সীবাজারের কোনাগাঁও এলাকার ভাঙনের ফলে আরও প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকায় প্রাথমিকভাবে কিছু ত্রাণ সামগ্রী বিতরন চলছে। আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দাল হোসেন জানান, নদীর একাধিক স্থানে ভাঙনের ফলে ঘোড়ামারা, খেওয়ানিঘাট, কান্দিগাঁও, বন্দরগাঁও, মধ্যভাগ, হেরেঙ্গাবাজার গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার পরিবারে প্রায় পনের হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ইসলামপুর, মুন্সীবাজার, রহিমপুর, শমশেরনগর, পতনঊষারের প্রায় ত্রিশহাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এসব এলাকার ফসলি জমি, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট নিমজ্জিত হচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌছেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বন্যায় পানিবন্দি মানুষের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধলাই নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করছি। এছাড়া বন্যাদুর্গত এলাকায় কিছু কিছু পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বন্যার পানি নিম্নাঞ্চলের শমশেরনগর, পতনঊষার ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এসব বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন এ দিকে সতর্কতার সাথে নজরদারী করা হচ্ছে।