নাইজেরিয়ায় ইলেকট্রনিক বর্জ্যের অভিনব রিসাইক্লিং

0
(0)

আজকাল মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, কম্পিউটার দ্রুত পুরানো হয়ে যায়৷ পুরানোকে সরিয়ে আসে হালের মডেল৷ সেই ইলেকট্রনিক বর্জ্য রিসাইক্লিং না করলে মানুষ ও পরিবেশের ক্ষতি অনিবার্য৷ এই লক্ষ্যে নাইজেরিয়ায় শুরু হয়েছে এক দারুণ উদ্যোগ৷ নাইজেরিয়ার লাগোস শহরে ইলেকট্রনিক বর্জ্য ফেলার অনেকগুলি জায়গা রয়েছে৷ সেখানে প্লাস্টিকের পোড়া গন্ধ নাকে আসে৷ সেই বর্জ্য কাজে লাগিয়ে অনেক মানুষ আয় করেন৷ কিন্তু বিষাক্ত টক্সিক ধোঁয়া ও হেভি মেটালের কারণে সেই কাজ বেশ বিপজ্জনক৷ কর্মীরা হাতে করেই ইলেকট্রনিক বর্জ্য আলাদা করেন এবং কাঁচামাল হিসেবে সেগুলি বেচে দেন৷

এমন বর্জ্য ফেলার জায়গাগুলি কিন্তু বে-আইনি৷ গোপনে সেখানে ভিডিও তোলা হয়েছে, কারণ বর্জ্য কুড়ানো মানুষগুলি নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে চান৷ নাইজেরিয়ার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংগঠনের প্রধান প্রো. ওলাডেলে ওসিবানজো বলেন, ‘‘তারা একটি যন্ত্র দিয়ে অন্যটির মেরামতি করে৷ কোনটা ভালো আছে, কোনটা নয় – তা তারা দেখে৷ সেটা নিয়ে কী করবে বুঝতে পারে না৷ তাই মাটিতে পুঁতে অথবা পুড়িয়ে ফেলে৷ তার ফলে সৃষ্ট ডায়ক্সিন বাতাস ও মাটি দুষিত করে৷ তাদের কার্যকলাপের ফলে মাটিতে অনেক সময়ে ৫০০ গুণ হেভি মেটাল শনাক্ত করা হয়৷

ইফেয়ানি ওচোনগর ইলেকট্রনিক বর্জ্যের জন্য ভিন্ন সমাধানসূত্র বার করেছেন৷ তিনি ই-টেরা নামের এক রিসাইক্লিং কোম্পানি খুলেছেন, যা সরকারের বিধিনিয়ম মেনে কাজ করে৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে ইলেকট্রনিক যন্ত্র খুলে যন্ত্রাংশ আালাদা করা হয়৷ তারপর প্রত্যেকটি টুকরোর মৌলিক অংশগুলিও আলাদা করা হয়, যেমনটা টেবিলের উপর দেখা যাচ্ছে৷ কিবোর্ড, ইস্ত্রি, স্পিকারের অংশগুলি অন্যদিকে রাখা আছে৷’’

ইফেয়ানি এই জটিল সিস্টেমে বিনিয়োগ করেছেন, গোটা নাইজেরিয়ায় যার তুলনা নেই৷ এর মাধ্যমে তাঁর কোম্পানি ইলেকট্রনিক বর্জ্য এমনভাবে আলাদা করতে পারে, যাতে মানুষ বা পরিবেশের ক্ষতি না হয়৷ টক্সিক ধোঁয়াও শুষে নেওয়া হয়৷

বিশ্বব্যাপী তথ্য প্রযুক্তি বাজারে সব সময়ে উদ্ভাবনের চাপ কাজ করে৷ নতুন ডিভাইস দ্রুত সেকেলে হয়ে পড়ে৷ ফলে টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, চার্জার – সব কিছু ইলেকট্রনিক বর্জ্যে পরিণত হয়৷

ই-টেরা নাইজেরিয়ার প্রথম ই-ওয়েস্ট কোম্পানি৷ ডিভাইস খুলে ফেলার পর ইলেকট্রনিক বর্জ্য আলাদা করে কাঁচামাল অনুযায়ী ভাগ করা হয়৷ এর একটা বড় অংশ বিক্রি করা হয়৷ সেটাই কোম্পানির আয়ের প্রধান উৎস৷

২০১৭ সালে গোটা বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি টন ইলেকট্রনিক বর্জ্য সৃষ্টি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ তার কিছু অংশ লাগোস শহরের উপকণ্ঠ্যে বর্জ্যের স্তুপে জমা হবে৷ কিন্তু ইফেয়ানি ওচোনগর সেই বোঝাকে টেকসই সম্পদে রূপান্তরিত করে প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছেন৷

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.