যে কোন দানই ভিক্ষার শামীল

শান্ত পথিক
আমাদের মধ্যে একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে। যেমন- ধান, গম, পাট ইত্যাদিতে স্বয়সম্বর হলে আমাদের কৃষির সব সমস্যা মিটে যাবে এ ধারণাও ভুল। ধান, গম, পাট এসবের পাশাপাশি ডাল তেল ফল শাক সবজি জাতীয় কৃষির উপর একই গুরুত্ব প্রদান করে এগুলোর উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে হবে। মৎস্য ও পশু সম্পদের দিকে একই গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ্একটি সম্ভাবনাময় দেশ কোন সন্দেহ নেই। দরকার শুধু আন্তরিকতা ও সম্মিলীত প্রচেষ্টা।
সম্ভাবনাময় আগামীর কৃষি ব্যাস্থাপনার জন্য দেশকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে কোন মৌসুমে কোন এলাকায় কোন কৃষি দ্রব্য বেশী উৎপাদন করা যায় এবং সেখানে সে রকম কৃষি শিল্প প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন, ধান, গম সহ বিভিন্ন ফসল দেশের সব জায়গাতেই কম বেশী জন্মে এ গুলোর পাশাপাশি উৎপাদন সমন্বয় করে অনান্য কৃষিপণ্যর উৎপাদন বাড়াতে হবে। অতীব দুঃখের সাথে বলতে হয় সম্ভাবনাময় কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আবাদি জমি দ্রুত আগ্রাসীদের গ্রাসে পরিনত হচ্ছে। খাদ্য সংকট অথবা খাদ্যভাবের আশংকা থেকে রক্ষা পেতে কৃষির বিকল্প নেই। এর জন্য কৃষি আবাদী জমির উত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আমাদের কৃষি জমি মৌলিক ভাবে উৎকৃষ্টমানের হলেও অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্পায়নের কারণে আবাদী জমির পরিমান কমে আসছে। এ ক্ষেত্রে দেশের কৃষিজ জমি রক্ষা করতে প্রচলিত ভূমি আইনের অধিকতর সময়োপযোগী করে এর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ভূমি শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষার কর্মসূচিভুক্ত করণের জন্য জাতীয় বিশেজ্ঞ কমিটি গঠন করা যেতে পারে। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দূর্যোগের দেশ তাই আবহাওয়া, মাটির গুনাগুন তাপমাত্রা সহ ফসল উৎপাদনের প্রয়োজনীয় উপকরনের কথা বিবেচনা করে অঞ্চল ভিক্তিক কোন ফসল চাষ করতে হবে তা যেমন নির্নয় করা দরকার আবার ভাল ফসল উৎপাদন করতে ভাল বীজের উৎপাদন ও সরবারাহ করা দরকার। শহর গ্রামের সমস্ত ফাঁকা জমি এমনকি অফিস আদালত সহ প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনাতে চাষবাদ কার্যক্রম শুরু করতে হবে। আমাদের কৃষি ও কৃষিজ উপখাত গুলো ক্রমসংকুচিত হয়ে পরেছে। অধিক জনসংখ্যার জন্য আজ কৃষি জমি সংকুচিত হয়ে আসছে। বন ও চাষের জন্য উজার হচ্ছে। বেপরোয়া রাসায়নিক সার ও বিষাক্ত কীটনাশকের প্রভাবে জীববৈচিত্র নিঃশেষিত হচ্ছে।
কৃষি ও কৃষির উপখাতগুলোর জন্য যেমন দরকার সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের পৃষ্টপোষকতা তেমনী কৃষকদেরও পর-নির্ভশীলতা কমিয়ে আনতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে কোন দানই ভিক্ষার শামীল।