বাজেটকে সামনে রেখে কমলগঞ্জ চা জনগোষ্ঠীর সংবাদ সম্মেলন

0
(0)

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি//
আসন্ন ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটে বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনৈতিক শিল্পাঞ্চল চা বাগানের চা জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথক বরাদ্ধ রাখার দাবিতে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানে জাগরণ যুব ফোরাম সংগঠনের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন। রবিবার (২৭ মে) বেলা ১১টা শমশেরনগর চা বাগানে জাগরণ যুব ফোরাম আইটি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাস লিখিত বক্তব্যে বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে চা-জনগোষ্ঠী ও চা শিল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। অথচ দেশে কোন বছরই জাতীয় বাজেটে চা-জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথক বরাদ্ধ থাকে না। উদাহরণ দিয়ে বলা হয় দেশের পার্বত্য জনগোষ্ঠীর জন্য ৭ শত কোটি টাকার বরাদ্ধ থাকে। সে হিসাবে চা-জনগোষ্ঠীর জন্য ১৯ শত কোটি টাকার পৃথক বরাদ্ধ থাকার দাবি রাখেন চা জনগোষ্ঠী।
চা শ্রমিকরা পাহাড়ি এলাকায় রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, খালি পায়ে জোঁক, মশা, সাপসহ পোকামাকড়ের কামড় খেয়ে দৈনিক মাত্র ৮৫ টাকা মজুররিতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় অনেক কষ্টে কাজ করেন। আর বসবাসের মাণও খুব নিন্মমাণের। নেই শিক্ষার ও চিকিৎসার ভাল ব্যবস্থা। চা বাগানে কানু, তেলেগু, মুন্ডা, লোহার, উরিয়া, রবিদাস, সাওতাল, কৈরী, গোয়ালাসহ ৯৬টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস। তাদরে সবারই আলাদা ভাষা,সংস্কৃতি, আচার-আচরণ,ধর্মীয় রীতিনীতি, পুজা-উৎসব, বিবাহ প্রথা, সমাজ কাঠামো দেশের মূল ধারার জনগোষ্ঠী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এখনও এদের আদিবাসী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়নি এমনকি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তালিকাভুক্তও করেনি। যে কারণে চা জন-গোষ্ঠী বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে সংবিধানের মৌলিক অধিকারভুক্ত হিসাবেই চা-জনগোষ্ঠীর প্রকৃত উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু দাবি উপস্থাপন করে জাতীয় বাজেটে পৃথক বরাদ্ধ দাবি করা হয়। দবিগুলি হচ্ছে, চা জন-গোষ্ঠীর পৃথক ভাষা, সংস্কৃতি ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য একটি কালচারাল একাডেমী প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চা বাগানে শিক্ষার মান উন্নয়নে পর্যাপ্ত সরকারী প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয় ও করেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চা বাগানের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শিক্ষাবৃত্তি চালু করতে হবে। প্রতিটি চা বাগানে একটি করে আইট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চা বাগান এলাকায় প্রয়োজনীয় সরকারী হাসপাতার স্থাপন করতে হবে। চা জন-গোষ্ঠীর মজুরি, ভূমিসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় বা কমিশন গঠন করতে হবে। চা শিল্পকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে(এডিপি) পুনরায় অন্তুর্ভুক্ত করতে হবে।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, মাসিক চা মজদুর পত্রিকার সম্পাদক সীতারাম বীন, শমশেরনগর চা বাগান পঞ্চাযেত কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোপাল কানু, নারায়ন চন্দ্র বাউরী, বাবুল মাদ্রাজী, রাজ কুমার রবিদাস, রঞ্জিত রবিদাস, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাণিজ্য(সম্মান) বিভাগের অধ্যয়নরত ছাত্র সন্তোষ রবিদাস ও স্কুল শিক্ষার্থী স্মৃতি ভর।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.