স্বরূপকাঠিতে চাঁদাবাজির অভিযোগে কোষ্টগার্ডের মাঝি গ্রেফতার
হযরত আলী হিরু,পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে মামলাসহ নানা ধরনের ভয় দেখিয়ে জেলেদের জিম্মি করে নিয়মিত লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা তোলার অভিযোগে কোষ্টগার্ডের সাবেক মাঝি ছগির (৪০) ও তার সহযোগী রুবেলকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিয়মিত মামলা রুজু শেষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ছগির ও রুবেলকে পিরোজপুর কোর্টে প্রেরন করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে ছগির ও রুবেলকে নেছারাবাদ থানার এস আই সঞ্জিব কুমার পাললানের নেতৃত্বে পুলিশ বাসষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। ভুক্তভোগী জেলেরা ছগিরের হাত থেকে রেহাই ও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়ে নেছারাবাদ উপজেলা মৎস্য অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন । জেলেরা তাদের ওই লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন জাটকা নিধন অভিযানের জন্য স্বরূপকাঠিতে নিয়োজিত কোষ্টগার্ডের মাঝি হিসেবে বরিশালের চরকাউয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো. ছগির ২০১৬ সালে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই ছগির কোষ্টগার্ডের সহযোগীতায় জেলেদেরকে নিশিদ্ধ কারেন্ট জাল ব্যাবহারের জন্য মামলাসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে। ভয়ে জেলেরা ছগিরের দাবী অনুযায়ী তাকে নৌকা প্রতি সপ্তাহে ৩০০ টাকা করে চাঁদা প্রদান করত। এভাবে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস হতে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত ছগির ৩০ জন জেলের কাছ থেকে দুই লক্ষ বায়ান্ন হাজার টাকা, বানাড়ীপাড়া ও নাজিরপুর এলাকার ১০০ জন জেলেদের কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে ৩০ হাজার টাকা করে ৭ মাসে ৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা চাঁদা তুলেছে। চাঁদার টাকা ছগির ০১৭৯১২৪৯৮৭৮ ও ০১৭১৯৫২৫৭২৯ নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে ও নগদে তুলত যার অনেক প্রমান মোবাইলে রেকর্ড আছে বলে দাবী করেন অভিযোগকারী ওই জেলেরা। জেলেরা আরও অভিযোগ করেন ছগির তার আত্মীয় জামালকেও বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে মাঝি হিসেবে নিয়োগ পাইয়ে দেন। এবছরে জামাল ও সেরাজ মাঝির মাধ্যমে নতুন করে জেলেদেরকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে পূর্বের ন্যয় চাঁদা দেয়ার জন্য। ইতিমধ্যে ছগির মাঝি জামালদের মাধ্যমে ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাস হতে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৮০ হাজার টাকা চাঁদা তুলেছেন বলে জেলেদের অভিযোগ। এ ব্যাপারে নেছারাবাদ কন্টিনজেন্টের পেটি অফিসার মো. ইরফান আলী জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি আমি আসার পূর্বেই ছগিরকে মাঝির দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। সে এখন আর আমাদের মাঝি নয় সে এখন আমাদের ইনফরর্মার হিসেবে কাজ করে। অপকর্মের জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যহতি পাওয়া লোককে কেন ইনফরর্মান করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমার জানামতে একটি ভুল মামলায় জড়িয়ে ছগিরকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। তার সেই মামলা এখন ভেনিসের পথে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এম এম পারভেজ জানান, কোষ্টগার্ডের মাঝি ছগির, জামালসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জেলেদের কাছ থেকে চাাঁদাবাজির কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং প্রাথমিকভাবে এর কিছু সত্যতার প্রমান পাওয়া গেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই এম কে মজিবর রহমান জানান, ছগির, রুবেলসহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে জেলে তোফাজ্জেল বাদী হয়ে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন। ছগির গতবছরও একটি চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিন মাস জেল খেটে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।