আবদুল্লাহ আল নোমান//
গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস অনেকেরই বমি, বমিভাব, মাথা ঘুরানো বা খাবারে অরুচি থাকে। ফলে খেতে না পারা আর বারবার বমির কারণে অনেকেরই ওজন কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস একজন গর্ভবতী নারীর রোজা না রাখাই ভালো। তবে তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস গর্ভস্থ শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই এ সময় মায়ের পুষ্টি ও গর্ভস্থ শিশুকে গ্লুকোজসহ অন্যান্য পুষ্টির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে।
গর্ভাবস্থার মাঝের তিন মাসে গর্ভবতী মায়েরা বেশ একটু ভালো বোধ করেন। এ সময় সাধারণত তাদের বমি হয় না এবং খেতেও কোনো অসুবিধার সৃষ্টি হয় না। তাই এ সময় আর অন্য কোনো অসুস্থতা না থাকলে গর্ভবতী মা রোজা রাখতে পারেন। তবে তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। শেষের তিন মাসে গর্ভস্থ শিশুসহ জরায়ুর উচ্চতা বাড়ার কারণে গর্ভবতী মায়ের অসুবিধা আরো একটু বেড়ে যেতে পারে। এ সময় নিঃশ্বাস ছোট আর ঘন ঘন হয়। তাছাড়া খাবার হজম হতে দেরি হয়, গলা-বুক জ্বালাপোড়া বেড়ে যায় এবং স্বাভাবিক নড়াচড়া ধীর হয়ে আসে। তবে গর্ভবতী মা যদি অস্বস্তিবোধ না করেন এবং স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া করতে পারেন এবং সেই সঙ্গে যদি তার শরীরে পানি শূন্যতার সৃষ্টি না হয় তবে তিনি ইচ্ছা করলেই রোজা রাখতে পারেন।
এখন যেহেতু গরমকাল আর রোজার সময় প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা হয়ে গেছে, তাই গর্ভবতী মা যদি এমন দীর্ঘ সময়ের রোজা রাখতে চান, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ দিনে একজন গর্ভবতী মায়ের ছয়বার খাবার গ্রহণ করা উচিত। তাই যেহেতু রোজার সময় এই খাবারের হেরফের হয়, তাই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি।
শুধুমাত্র একজন পরিপূর্ণ সুস্থ, যাকে তার চিকিৎসক রোজা রাখার জন্য ফিট বলে অভিহিত করেছেন, সেসব গর্ভবতী মায়েদেরই রোজা রাখা যাবে। কিন্তু যদি কোনো গর্ভবতী মা অসুস্থতার জন্য রোজা করতে না পারেন অথবা রোজা রাখার পর যদি অসুস্থ বোধ করেন, শরীরে কাঁপুনি অনুভূত হয় বা শরীর নিস্তেজ হয়ে আসে অথবা বমি করে ফেলেন এবং রোজা রাখার মতো অবস্থা না থাকে, তাহলে তিনি রোজা ভাঙতে পারেন।