ইতিহাস গড়ে জয় বাংলাদেশের

0
(0)

আবদুল্লাহ আল নোমান//
নিদাহাস ট্রফিতে প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর বেশ হতাশ ছিলো বাংলাদেশ সমর্থকেরা। সেই হতাশা আরো দ্বিগুণ হয় দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার স্কোর ২০০ পার হলে। কিন্তু টাইগার কখন হুংকার দেয়া, তা ত আর কাগজে কলমে হিসেব করে ঠিক রাখা যায় না। লঙ্কান সিংহদের দাপুটে ব্যাটিং শেষে তাই হঠাৎ করেই হুংকার দিয়ে ওঠে টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে শুরুতে ২১৫ রানের টার্গেট নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটি উপহার দেয়া লিটন দাস ও তামিম ইকবাল। কিন্তু ভুল শট খেলে তাদের বিদায়ে আবারো মুষড়ে যায় সবাই। এবারো কি তীরে এসে তরি ডোবাবে বাংলাদেশ?
না, শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত এক জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের থেকেই এই জয়ে বড় অবদান রেখেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ব্যাট হাতে ৩৫ বলে ৭২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে শ্রীলঙ্কান বোলারদের এক হাত দেখে নিয়েছেন তিনি। ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারির পাশাপাশি ৪টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন তিনি। ব্যাট হাতে এই লড়াই চালিয়ে যেতে সহযোদ্ধা হিসেবে পেয়েছেন সৌম্য ও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে। কিন্তু ম্যাচে ক্রিজের আসার পর থেকে সেট হওয়ার চেষ্টা করতে থাকা সৌম্য নষ্ট করে ফেলেন বেশ কিছু বল। ২২ বলে ২৪ রান করে তিনি সাজঘরে ফিরলে বাকি দায়িত্ব নিয়ে নেন দলের সিনিয়র দুই সদস্য। রিয়াদ-মুশফিক দ্রুত গতিতে রান তুলে বাংলাদেশকে নিয়ে যায় জয়ের দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু শেষ ওভারের আগে রিয়াদ ও সাব্বিরের বিদায়ে আবারো ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।
হাতে আছে ৬ বল। রান প্রয়োজন ৯। এর আগেও এমন পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত সামলে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ। এবারো ছিলো সেই শঙ্কা। কিন্তু ভরসার বিষয় ছিলো একটি, ক্রিজে মুশফিক। পেরেরার প্রথম বলটি ছিলো ইয়র্কার। তাতে দ্রুত চার-ছয় মারার চেষ্টা না করে অফ সাইডে ঠেলে দিয়ে ২ রান নিয়ে নেন মুশফিক। দ্বিতীয় বলেই চার। ব্যাস, দুই বলে ৬ রান নিয়ে চাপমুক্ত বাংলাদেশ। বাকি চার বলে ৩ রান লাগবে। এ সময় দ্রুত সিঙ্গেল নেয়ার চেষ্টা করেন মুশফিক। কিন্তু লং অন সাইডে মিস ফিল্ডিংয়ের সুযোগ নিয়ে প্রথম রানের পর দ্বিতীয় রানটিও নিয়ে নেন তিনি। ফলে শেষ তিন বলে বাকি থাকে এক রান। আবারো সবার মনে শঙ্কা। শেষ সময়ে কোন ভুল করে বসে কিনা টাইগার ব্যাটসম্যান। কিন্তু না, ভুল আর করেননি মুশফিক চতুর্থ বলটি ধীরে সুস্থে খেলে এক রান নিয়ে দুই বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন এই সাবেক অধিনায়ক।
ব্যাট হাতে তার এই দুর্দান্ত নৈপুন্যের ফল হিসেবে ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরষ্কার পান তিনি।
এর আগে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে স্বাগতিক লঙ্কানদের বিপক্ষে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। স্বাগতিকরা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রান সংগ্রহ করে। লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে পেরেরা ৭৪ ও মেন্ডিস ৫৭ রান করেন।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হেরে এই ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে খেলে টাইগাররা। ম্যাচে দানুশকা গুনাথিলাকা বোল্ড আউট করে উইকেটের খাতা খোলেন মোস্তাফিজ। এরপর জোড়া আঘাত হানেন মাহমুদুল্লাহ। তাসকিন দিনেশ চন্দ্রিমালকে ফেরানোর পর মোস্তাফিজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিকারে পরিণত হন পেরেরা। বাংলাদেশ বোলারদের চাপের মুখেও দুর্দান্ত ব্যাট করে তিনি ৪৮ বলে ৭৪ রান সংগ্রহ করেন। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট লাভ করেন মোস্তাফিজ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.