আগৈলঝাড়ায় পিতা হত্যায় ঘাতক পুত্রকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল জেলা পুুলিশের কল্যাণ সভায় পুরস্কৃত তদন্তকারী কর্মকর্তা

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পিতাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চাঞ্চ্যলকর মামলায় পাঁচ মাস পরে ঘাতক পুত্রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। জেলা পুুলিশের কল্যাণ সভায় পুরস্কৃত হলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোশারফ হোসেন জানান, মামলায় ১০জন স্বাক্ষির স্বাক্ষ্য গ্রহণ, হত্যায় ব্যবহৃত প্রায় দুই ফুট লম্বা বগি দা জব্দ, রিমান্ড ছাড়া আসামীর ১৬১ ও ১৬৪ধারার জবানবন্দি গ্রহণ করে দীর্ঘ তদন্ত শেষে গ্রেফতারকৃত ঘাতক পুত্র রেজাউল (২৮) এর বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় গত ২৭ ফ্রেব্রায়ারী বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। যার সিএস নং-১৭।
অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে এসআই মোশারফ আরও বলেন, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর কালীবাড়ি গ্রামে ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ি সাত্তার মোল্লা (৫০) এর প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলেদের কথায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রতিদিনের মত ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাতের খাবার খেয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী রুমা বেগম ও নয় মাসের শিশু সন্তান রুমানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পরেন তারা। একই ঘরের বারান্দায় শুয়ে থাকা প্রথম পক্ষের মেঝ ছেলে টাওয়ার শ্রমিক রেজাউল (২৮) রাত দশটার দিকে তার পিতা সাত্তারকে জরুরী কথা আছে বলে ঘুম থেকে ডেকে ঘরের বাইরে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ছেলে রেজাউল বগি দা দিয়ে বাবা সাত্তারের মুখে, ঘারে, কপালে, থুতুনী, পায়ে ও পেটে এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আহত সাত্তারের ডাক চিৎকারে স্ত্রী রুমা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করতে উদ্যত হয় ঘাতক পুত্র রেজাউল। তাৎক্ষনিক প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে সাত্তারকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাত্তারকে মৃত ঘোষণা করেণ।
খবর পেয়ে এসআই মোশারেফ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতেই ঘাতক পুত্র রেজাউলকে গ্রেফতার করে হত্যায় ব্যবহৃত বগি দা উদ্ধার করেন তিনি। ওই ঘটনায় নিহত সাত্তারের স্ত্রী রুমা বেগম বাদী হয়ে একমাত্র ঘাতক পুত্র রেজাউলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন, নং-৮(১৮.৯.১৭)।
পর দিন (১৯.৯.১৭) বরিশাল চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. গোলাম ফারুকের কাছে ঘাতক রেজাউল ১৬৪ ধারায় পিতাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার লোমহর্ষক স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে। গ্রেফতারের পর থেকে ঘাতক পুত্র রেজাউল জেল হাজতে রয়েছে। মামলায় দ্রুত অগ্রগতির কারণে জেলা পুুলিশের কল্যাণ সভায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোশারফ হোসেনকে ৫হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।