রেকর্ড গড়েও পারলো না বাংলাদেশ

0
(0)

আবদুল্লাহ আল নোমান,
রেকর্ড ইনিংস গড়েও শেষ পর্যন্ত পারলো না বাংলাদেশ। পুঁজিটা বেশ বড়ই ছিল ১৯৩ রান। তবে বড় পুঁজি নিয়ে যেমন লড়াই আশা করেছিলেন টাইগার সমর্থকরা, তার ছিঁটেফোটাও দেখা গেল না। বোলারদের ব্যর্থতায় হারের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। পাওয়ার ব্যাটিংয়ে ২০ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে অনায়াসেই ১৯৪ রানের টার্গেট অতিক্রম করে শ্রীলঙ্কা।
মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিটা তারা জিতেছে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে। এতে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল দিনেশ চান্দিমালের দল। আগামী রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী লড়াই। খেলা শুরু বিকেল ৫টায়। ত্রিদেশীয় ওয়ানডে ফাইনাল ও টেস্ট সিরিজ হারের পর সিংক্ষিপ্ত সংস্করণে টাইগারদের সামনে মান বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ।
এদিন বাংলাদেশের মতো উড়ন্ত সূচনা করে শ্রীলঙ্কাও। ৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে মাঠ ছাড়েন দাসুন শানাকা ও থিসারা পেরেরা। শানাকা ২৪ বলে ৪২ ও পেরেরা ১৮ বলে ৩৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস প্রদর্শন করেন। ওপেনার কুশল মেন্ডিস ২৭ বলে ৫৩ ও দানুশকা গুনাথিলাকা ১৫ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দাপুটে শুরু এনে দেন। উপুল থারাঙ্গা ৪ ও নিরোশান ডিকভেলা ১১ রান করেন।
অভিষিক্ত নাজমুল ইসলাম অপু দু’টি ও আফিফ হোসেন নেন একটি উইকেট। ৩.৪ বলে ৫২ রানের বিনিময়ে অন্যটি পেসার রুবেল হোসেনের। তিন ওভারে ৩২ রানের খরুচে বোলিং করেন মোস্তাফিজুর রহমান। দুই ওভারে ৩৩ রান দেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
এর আগে, সৌম্য সরকার আর মুশফিকুর রহীমের জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫ উইকেটে ১৯৩ রানের বড় পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ।
তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করেন জাকির হাসান। অভিষেক ম্যাচে খুব একটা ভালো করতে পারেননি তিনি। ৯ বলে ১০ রান করে দানুষ্কা গুনাথিলাকার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এ ওপেনার।
তবে অফফর্মের কারণে ওয়ানডে আর টেস্ট দল থেকে বাদ পড়লেও টি-টোয়েন্টি ফরমেটটা যে ভীষণ উপভোগ করেন, সেটা আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছেন সৌম্য। মিরপুরে ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব দেখিয়েছেন এ ওপেনার।
হাফসেঞ্চুরির আগমুহূর্তে অবশ্য একটু বল খরচ করেছেন, তারপরও ৩০ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সৌম্য। টি-টোয়েন্টি ফরমেটে বাঁ-হাতি এ ওপেনারের এটি ছিল প্রথম হাফসেঞ্চুরি।
জীবন মেন্ডিসের লেগস্পিনে এলবিডব্লিউ হয়ে ৫১ রানে ফিরেন সৌম্য। জীবন মেন্ডিসের ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন এ ওপেনার। উরুতে চোট নিয়ে এরপর খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। পরের বলেই উইকেটরক্ষকের দুর্দান্ত ক্যাচে শূন্য করে সাজঘরে ফেরেন অভিষিক্ত আফিফ হোসেন।
টানা দুই উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা বিপদে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে দুর্দান্ত এক জুটিতে সেই বিপদ কাটিয়ে উঠেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহীম। লঙ্কান বোলারদের রীতিমতো তুলোধুনো করে ৭৩ রান যোগ করেন এ যুগল।
সৌম্য সরকারের পর মাত্র ৩৭ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিকুর রহিমও। তবে ফিফটির আশা জাগিয়েও সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। বাঁ-হাতি পেসার ইসুরু উদানাকে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন ৪৩ রানে। ৩১ বলের ইনিংসে টাইগার অধিনায়ক ২টি করে চার-ছক্কা হাঁকান।
এরপর সাব্বির রহমান ফিরেন ১ রান করে। তবে শেষ পর্যন্ত দলের হাল ধরে ছিলেন মুশফিক। ৪৪ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। দুর্দান্ত এ ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৭টি চার আর একটি ছক্কায়। আরিফুল হক অপরাজিত থাকেন ১ রানে।
এত দিন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশর দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১৯০/৫ রান। যেটা ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ড সফরে করে টাইগাররা। আজ সেই রেকর্ড ভেঙে ব্যাটিংয়ে ১৯৩/৫ রানের স্কোর গড়ল বাংলাদেশ দল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের এটা ইতিহাস সেরা স্কোর। শুধু রানের দিক থেকেই নয়! ভেন্যুর দিক থেকেও বৃহস্পতিবার মিরপুরে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের স্কোর গড়েন মাহমুদউল্লাহরা।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.