সম্ভাবনাময় রফতানি পণ্য পেয়ারা পাতা

আবদুল্লাহ আল নোমান
পেয়ারা আমাদের দেশের সকলের পরিচিত একটি ফল হলেও এর সম্ভাবনাময় দিক সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। পেয়ার গুনগত মান আপেলের থেকে কোন অংশে কম নয়। পেয়ারা কেবলমাত্র গরিবের ফল তাই নয়। পেয়ারা এবং পেয়ারা পাতার রয়েছে বিচিত্র ঔষধি গুন। পেয়ারার পুষ্টি ও ঔষধি গুন প্রতি ১০০ ভাগ পেয়ারা আছে ১৪.৫ ভাগ কার্বহাইড্রেট ১.৫ ভাগ প্রোটিন ০.২ ভাগ ফ্যাট ০.৮ ভাগ খনিজ পদার্থ ০.০৪ ভাগ ফসফরাস ০.০১ বাগ ক্যালসিয়াম ১.০ ভাগ লৌহ ও ভিটামিন বি-১ বি-২ ও সি। প্রতিকেজি ফলের মধ্যে ৬৬০ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া পেয়ারা গাছের ছালের ক্কাথ ছোটদের উদরাময় রোগে ব্যবহার করা হয়। পেয়ারা পাতারও রয়েছে বিশেষ গুন। তাই পেয়ারা পাতা প্রক্রিয়াজাত করে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। পেয়ারা গাছের কোন কিছুই ফেলনা নয়। শুধু তার ব্যবহার ও উপযোগীতা জানলেই হয়। দেখা গেছে এক সময় যা ফেলনা ছিল পরবর্তী সময় তা মূল্যবান রফতানি পণ্যে পরিনত হয়েছে। এক্ষেত্রে পেয়ারা পাতা বিদেশে রফতানি করার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
অনুসন্ধান করে দেখা গেছে পেয়ারার চেয়ে পেয়ারা পাতার সম্ভাবনা বেশী বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশী পেয়ারা পাতার ব্যপক চাহিদা রয়েছে। পেয়ারা পাতা দিয়ে এক প্রকার চা তৈরী করেছে জাপান পেয়ারা পাতার চা মানব দেহের জন্য খুবই উপযোগী। বিশেষ করে যারা ডায়েবেটিক রোগী তারা স্বাচ্ছন্ধে পেয়ারা পাতার চা গ্রহন করতে পারে। এতে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এতে মানব দেহকে রি-ফ্রেশ করে দাঁত মজবুদ ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। পেয়ারা পাতার চায়ে কোন ধরণের কৃত্তিম ফ্লেভার বা রং ব্যবহার করা হয় না। তাই তা মানব দেহের জন্য কোন ধরণের সমস্যা সৃষ্টি করে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেয়ারা পাতার চা ক্রমশ জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। বাংলাদেশে এখনও পেয়ারা পাতার চা উৎপাদন শুরু হয় নাই। তবে কয়েকটি কম্পানি পেয়ারা পাতা রফতানি শুরু করেছে।
জাপান, কোরিয়া, ইংল্যান্ড , যুক্তরাষ্ট্র, ডেনমার্ক, ইতালি, ফ্রান্স ও গ্রীসে পেয়ারা পাতার চায়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশী। অন্যান্য দেশেও পেয়ারা পাতার চায়ে চাহিদা রয়েছে। তবে সব গাছের পেয়ারা পাতা দিয়ে চা তৈরী হয় না। শুধু অর্গানিক পদ্ধতিতে যে সব পেয়ারা গাছ চাষ হয় সে পাতাই চা তৈরির জন্য বিবেচিত হয়। আমাদের দেশের বরিশালের আটঘর কুড়িয়ানা, কুমিল¬া, ভালুকা, চট্টগ্রামের কাঞ্চন নগরে প্রচুর পেয়ারা চাষ হয়। এসব জায়গায় শুধু পেয়ারাকে কাজে লাগানো হয়। পাতা বা অন্যান্য অংশ ছাগলের খাবার কিংবা লাকরি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পেয়ারা পাতার এই উজ্জ্বল সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে প্রচুর বৈদেশীক মুদ্রা অর্জন করার পাশাপাশি অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা য়ায়। প্রয়োজন উদ্ধোগ আর পৃষ্টপোষকতা। এবং উলে¬খিত এলাকায় পেয়ারা পাতার উপর ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়া যেতে পারলে অচিরেই বাংলাদেশের অন্যান্য রফতানি যোগ্য কৃষি পণ্যের মত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।