মিয়ানমারে ফের গোলাগুলি আগুন

0
(0)

আজিজুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার// বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারে ফের গোলাগুলির শব্দ, আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা গেছে। সেনাদের অভিযান বন্ধের পর থেকে হঠাৎ গত বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩টার দিকে রাখাইনের মাঙ্গালা ও পেরানপ্রু এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তের এপারের প্রত্যক্ষদর্শী । এ নিয়ে এপারের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আর এ কারণে গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার ওই সব এলাকা থেকে মানুষ পালিয়ে আসতে থাকে।
টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, এতদিন তারা মিয়ানমারের বৌদ্ধ নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ভালোভাবে থাকতে পেরেছে। এখন তারা রাশিডং, বুসিডংয়ের মতো মংডু’র মাঙ্গালা, পেরানপ্রু এলাকায় ঘরবাড়িতে আগুন দেয় এবং এলোপাতাড়ি গুলি করে। রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, রাখাইনের অনেক গ্রামে অগ্নিসংযোগ করা হলেও মাঙ্গালা ও পেরানপ্রু গ্রামটি এতদিন রক্ষিত ছিল। এসব গ্রাম থেকে কয়েকটি পরিবার এপারে চলে আসলেও বেশিরভাগ পরিবার রয়ে যায়। জানা গেছে, এসব গ্রামের লোকজন বেশিরভাগ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। গত দেড় মাস পূর্বে ওই গ্রামের ৩ পাচারকারী প্রায় ৪ লাখ ইয়াবাসহ বিজিবির হাতে আটক হয়েছিল। রাখাইনের প্রশাসনকে কোটি কোটি কিয়াতের বিনিময়ে ম্যানেজ করে ওই ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গ্রামটি রক্ষা করেছিল। আরো জানা গেছে, ওই গ্রামের ‘হুক্কাটা’ (চেয়ারম্যান) ছিল বৌদ্ধ (মগ)। তিনি প্রশাসনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে টাকার লেনদেন করতেন। তিনি সেনাদের হাত থেকে এতদিন গ্রামটি আগুনের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। হঠাৎ করে গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে নতুনভাবে গোলাগুলি ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে অজানা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।এদিকে উখিয়া সীমান্তবর্তী রাখাইনের অভ্যন্তরে ঢেকিবনিয়া গ্রামেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া রাখাইনের আরো কয়েকটি গ্রামে বিক্ষিপ্তভাবে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা গেছে।টেকনাফ-২ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক শরিফুল ইসলাম জোমাদ্দার মিয়ানমারে বিভিন্ন সীমান্তে গুলির আওয়াজের শব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা নিয়মিত টহল জোরদার রয়েছে।উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা শুরু হলে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও হত্যা করে সেনারা। এর ফলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে এবং এখনো প্রতিদিন রোহিঙ্গা পালিয়ে আসছে। অপরদিকে টেকনাফে নতুন করে ঢুকেছে আরো হাজারখানেক রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু। গত বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এসব রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। টেকনাফ মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন খান জানান, নতুন করে আসা এসব রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্ত করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.