কিমের বিরুদ্ধে আরও কড়া হচ্ছে আমেরিকা

0
(0)

((মুহম্মাদ আহছান উল্লাহ)) = দু’দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে আগেই। এ বার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠিন পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে আমেরিকা। হোয়াইট হাউস সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। কিম জং উনের দেশকে সন্ত্রাসে মদতদাতা রাষ্ট্রের তকমা দেওয়া যায় কি না, সে নিয়েই এখন আলোচনা চলছে বলে আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার।
আগামী সপ্তাহে দশ দিনের এশিয়া সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটিই তাঁর প্রথম এশিয়া সফর। চিন, জাপান, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে গিয়ে সেখানকার রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। তার ঠিক আগে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এত বড় পদক্ষেপের ভাবনা-চিন্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
মার্কিন হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও একের পর এক পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে গিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। এমনকী উত্তর কোরিয়া থেকে সরাসরি আমেরিকার কয়েকটি শহরকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন তিনি।
শাস্তি হিসেবে পিয়ংইয়ংয়ের উপর কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। এমনকী রাষ্ট্রপুঞ্জও সরব হয়েছে কিমের বিরুদ্ধে। আর্থিক ভাবে উত্তর কোরিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে ক্রমাগত। তবু থামানো থামানো
যায়নি কিমকে।
আজকের সাংবাদিক সম্মেলনে কিমের সৎভাই কিম জং নামের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন ম্যাকমাস্টার। কুয়ালা লামপুর বিমানবন্দরে খুন হন নাম। ম্যাকমাস্টার বলেছেন, ‘‘একটা দেশের সরকার যখন নার্ভ গ্যাস ব্যবহার করে প্রকাশ্য বিমানবন্দরে কাউকে খুন করে, এবং যিনি খুন হয়েছেন তাঁরই ভাই নিজে সেই খুনের নেপথ্যে থাকেন, তাকে সন্ত্রাসবাদ ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না। সুতরাং আমরা উত্তর কোরিয়াকে সন্ত্রাসবাদের মদতদাতার তকমা দেওয়া নিয়ে ভাবছি। খুব শীঘ্রই আপনারা বাকিটা জানতে পারবেন।’’
একই সঙ্গে আর্থিক ভাবে উত্তর কোরিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য বিশ্বের বাকি দেশগুলির সঙ্গে তাঁরা আলোচনা চালাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন ম্যাকমাস্টার। প্রসঙ্গক্রমে এসেছে চিনের কথাও। পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে বেজিংয়ের বন্ধুত্বের কথা অজানা নয়। পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু পরীক্ষা নিয়ে প্রথম দিকে বেজিং নীরব থাকলেও পরে মুখ খুলেছে তারা। কিমকে সংযত থাকার বার্তাও দিয়েছে বেজিং। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বক্তব্য, ‘‘চিন আগের থেকে অনেক বেশি সক্রিয়। তবু বেজিংয়ের এ নিয়ে আরও কিছু করা দরকার। আসলে চিনের এটা বোঝা উচিত, আমেরিকা নিজের জন্য কোনও উপকার চাইছে না।
উত্তর কোরিয়ার সামনে গোটা বিশ্বই এখন বিপন্ন।’’
এক দিকে, আমেরিকা যখন পিয়ংইয়ংকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে, উল্টে তাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অভিযোগ এনেছে উত্তর কোরিয়া। গত কাল কোরীয় উপদ্বীপের উপর দিয়ে মহড়া চালিয়েছে এক জোড়া মার্কিন বোমারু বিমান। মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে মহড়া দিয়েছে জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়ার বাহিনীও। গুয়ামে মার্কিন বায়ুসেনা ঘাঁটি অ্যান্ডারসন থেকে বোমারু বিমান উড়ে যাওয়ার খবর স্বীকার করেছে আমেরিকাও। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থার বক্তব্য, এ ভাবে গোটা কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনার পারদ চড়াতে চাইছে ওয়াশিংটন। হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে তাদের সার্বভৌমত্বেও। তবে মার্কিন বায়ুসেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনও আগ্রাসন নয়, রুটিন মাফিক মহড়া চালানো হয়েছে কাল। যাতে আমেরিকাকে সাহায্য করেছে তার দুই বন্ধু দেশ, জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়া।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.