নিউ ইয়র্কে হামলাকারীর পরিচয় জেনেই বদলে গেল ট্রাম্পের সুর?

আপডেট প্রতিবেদন :
মাত্র এক মাসের ব্যবধান। সুরটা আমূল বদলে গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ২ অক্টোবরের রক্তাক্ত রাতে লাস ভেগাসে হামলাকারীর নাম ছিল স্টিফেন প্যাডক। ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল প্যাডকের গুলিতে। ৫০০-রও বেশি মানুষ জখম হয়েছিলেন। কিন্তু, প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আগে পাঁচ ঘণ্টা সময় নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে যে হামলা হল, তীব্রতায় বা প্রাবল্যে তা আগের হামলার চেয়ে কম। বাইক বে-তে ট্রাক নিয়ে হানা দিয়েছিল হামলাকারী। ৮ জনকে চিরতরে পিষে দিয়েছে ট্রাক। ১১ জন জখম। কিন্তু, এ বার হামলাকারীর নাম সায়ফুল্লো হাবিবুল্লায়েভিচ সাইপভ। দেড় ঘণ্টার মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ‘আমেরিকায় এ সব চলবে না’— সাফ কথা ট্রাম্পের। অন্য কোনও দেশ থেকে আমেরিকায় যাতায়াতের উপর নজরদারি যে ভাবে কঠোর করা হয়েছে, তা আরও কঠোর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হোমল্যান্ড সিকিওরিটি বিভাগকে। টুইটারে এমনও জানালেন প্রেসিডেন্ট। এক মাসেরও কম ব্যবধানে ঘটা দুই হামলায় প্রেসিডেন্টের প্রতিক্রিয়ায় এমন অসামঞ্জস্য কেন? প্রশ্ন উঠছে আমেরিকাতেই।
অক্টোবরের শেষ রাতে নিউ ইয়র্কে হামলা হওয়ার পরে ঠিক কী প্রতিক্রিয়া দিলেন ট্রাম্প? মার্কিন প্রেসিডেন্ট টুইটারে লিখলেন: অক্টোবরের গোড়ায় যখন লাস ভেগাসে হামলা হয়েছিল, তখন কিন্তু এতটা তীব্র ছিল না ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া। অনেক বেশি প্রাণহানি হয়েছিল, অনেক বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, গোটা পৃথিবী নড়েচড়ে বসেছিল। কিন্তু ট্রাম্প এক বারও বলেননি, ‘‘আমেরিকায় এ সব চলবে না।’’ তিনি টুইটারে লিখেছিলেন: মার্কিন নাগরিকদের একাংশই এই বৈষম্যটার দিকে আঙুল তুলেছেন। লাস ভেগাসের হামলাকারী খ্রিস্টান ছিল, শ্বেতাঙ্গও ছিল। সেই কারণেই কি পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করে মৃদু প্রতিক্রিয়া? নিউ ইয়র্কের হামলাকারী মুসলিম, হামলার পর সে ‘আল্লা হু আকবর’ বলছিল। সেই কারণেই কি দেড় ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেণ্ট বুঝে নিলেন, ‘অসুস্থ’, ‘বিকারগ্রস্ত’ কোনও মতাদর্শই এই হামলার পিছনে? প্রশ্ন ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছ’টি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের আমেরিকা প্রবেশের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ট্রাম্পের প্রশাসন, সেই নিষেধাজ্ঞা কতটা জরুরি ছিল, সে কথা বোঝাতেই এ বারের হামলার পরে এত কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন প্রেসিডেন্ট। বলছে আমেরিকার একাংশ। টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘মধ্যপ্রাচ্যে যাদের আমরা পরাজিত করেছি, সেই আইএস আমেরিকায় ফিরুক বা প্রবেশ করুক, তা আমরা কিছুতেই চাই না। যথেষ্ট হয়েছে।!’’ জঙ্গি হামলার পরে গোটা আমেরিকায় যে ভাবে রোষের সঞ্চার হয়েছে, ট্রাম্প তার ভিত্তিতে মেরুকরণ করতে চাইছেন। সেই কারণেই এই রকম বয়ান। বলছেন বিশ্লেষকদের অনেকেই।