বাংলার পিসা টাওয়ার খ্যাত গৌরনদীর সরকার মঠ

মো.আহছান উল্লাহ ও বিডি কামাল।
বাংলার লিসা টাওয়ার খ্যাত এবং ইতালীর পিসা টাওয়ারের আদলে নির্মিত নান্দনিক গৌরনদীর সরকার মঠ। বরিশাল ঢাকা মহা-সড়কের পূর্ব পাশে গৌরনদীর মাহিলারা গ্রামে পাঁচশ বছর পূর্বে এটি নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রত্মতত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত এই মঠটির সংস্কার প্রয়োজন। প্রাচীন এই পুরাকীর্তি দেশ বিদেশের পর্যটকদের দৃস্টি আকর্ষন করেছে।
জানাগেছে, মঠটি ১৯৯৬ সালে প্রত্মতত্ত অধিদপ্তর কতৃক সংষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আর মঠটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেখা দিয়েছে। মঠটির দক্ষিনের দেয়ালের জমিন থেকে ২০ ফুট উপরে মাঝে প্রায় ৭ ফুট জায়গার পলেস্তারা খসে পড়েছে। দক্ষিন পশ্চিম কোনের দেয়ালের পলেস্তারায় ফাটল দেখা গেছে। মঠটির বিভিন্ন দেয়ালে ক্ষতিকর শেওলা জমে রয়েছে। এতে মঠটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। মঠ লাগোয়া দক্ষিন দিকে একটি বড় দিঘি রয়েছে। দিঘি থেকে মঠকে রক্ষা করার নিরাপত্তা পাইলিংও ঝুকিপূর্ন।
নবাব আলীবর্দী খাঁর সময়ে কারুশিল্পি সরকার রূপরাম দাস গুপ্ত ১৭৪০ থেকে ১৭৫৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ে মঠটি নির্মান করেন। দ্ইু শতক জমির উপর ভূমি থেকে ২৭ দশমিক ৪৩ মিটার উঁচু নান্দনিক মঠটির ভিতরে বর্গাকার একটি কক্ষ রয়েছে। মঠটির পশ্চিম দেয়ালে আছে একটি খিলানযুক্ত প্রবেশ পথ। প্রবেশ পথের উপরে রয়েছে নান্দনিক অলংকরন। মঠটি দেখার জন্য প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে অনেক পর্যটকরা আসেন। পর্যটকদেও আনাগোনা আর নিয়মিত ধর্মীয় উৎসব,বৈশাখের অক্ষয় তিথিয়া, পৌষ পূর্ণিমা, শ্রাবনী পূর্ণিমা, রথ যাত্রাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বছরের বেশীর ভাগ সময় মূখোরিত থাকে।
খুলনা সদর থেকে আসা পর্যটক লিথুন ঘড়ামী বলেন, মঠটি দ্রæত সংস্কার করা প্রয়োজন এবং দুরের দর্শনার্থীদর জন্য অল্প খরচে বিশ্রাগার হলে ভালো হয়।
মঠের পাশে মুদি দোকানি বিবেক চন্দ্র হালদার বলেন, মঠটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। এখানে অনেক দুরদুরান্ত থেকে প্রতিদিনই পর্যটকরা কম বেশী আসেন। পর্যটকরা বেশী আসলে আমাদের বেচা বিক্রি ভালো হয়।
স্থানীয় বাসিন্ধা গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, মঠটির দক্ষিনের দেয়ালে যে জায়গায় পলেস্তারা খসে পরা অংশ নোনা হলে মঠটির জন্য ঝুকিপুর্ন হতে পারে।
মঠের প্রবীন পুরোহীত সম্ভবা নন্দ সরশ্বতি বলেন, মঠটির অবস্থান এবং এর কাছাকাছি মাটির স্তর এবং মঠের ধারন ক্ষমতা যান্ত্রিক ভাবে পরিক্ষা করলে ভালো হয়।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, প্রত্মতত্ত অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। মঠটি পরিক্ষা নিরীক্ষা করে সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা করা হবে বলে আমাদের জানিয়েছেন।