কমলগঞ্জে হাড়িয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতি মাছ

জয়নাল আবেদীন,মৌলভীবাজার থেকে
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নদী, হাওর, খাল-বিলে কমে বিলুপ্ত যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির ছোট বড় মাছ। চায়ের টিলাভূমি ও অন্যান্য আবাদি জমিতে কীটনাশক ব্যবহার, নদী ও বিল সেচ, নদীতে বাঁশের বেড়া, কারেন্ট জালের ব্যবহার, হাওর, খাল, জলাশয় ভরাটসহ নানা কারণে মাছের প্রজনন মাত্রাতিরিক্ত হারে হ্রাস পাচ্ছে। বর্তমানে বিদেশি প্রজাতির চাষকৃত মাছে বাজার ভরপুর। আমিষের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ উৎস মাছের উৎ্পাদন হ্রাস পাচ্ছে। প্রকৃতিতে হারিয়ে যাচ্ছে মা ও বাবা মাছ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যাপক জনসাধারণ মৎস্য আইন সম্পর্কে সচেতন না থাকায় ডিমওয়ালা মাছ ও পোনা মাছ নিধন, কারেন্ট জাল ব্যবহার, নদী ও বিল সেচ, নদীতে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশের খাঁটি ও অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করে মাছের অবাধ গতি প্রবাহে বাধা প্রদানসহ নানা অপতৎপরতা মাছের আবাসস্থল ও প্রজনন স্থান বিনষ্ট হচ্ছে। এসব কারণ ছাড়াও নদীনালা ভরাট ও সংকুচিত হয়ে আসার ফলে কমলগঞ্জ উপজেলাসহ মৌলভীবাজার জেলায় দেশীয় প্রজাতির মাছ দিন দিন কমে আসছে এবং মাছের প্রজনন মাত্রাতিরিক্ত হারে হ্রাস পেয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বৃহত্তর সিলেটে মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়নে জনবলের যথেষ্ট অভাব, আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব, সময় মতো বৃষ্টিপাতের অভাব, মাছের বংশ বিস্তারের জন্য পূর্বের মত পরিবেশের অভাব, বিল, জলাশয়, নদী-নালা সংকোচন ও ভরাট, মাছের আশ্রয় স্থলের পার্শ্ববর্তী জমিতে ব্যাপকহারে কীটনাশক ব্যবহার, পানি নিষ্কাষণ ও সেচ প্রকল্পের কারণে মাছের প্রজনন হচ্ছে না বলে তারা মনে করছেন।
সিলেট বিভাগীয় মৎস্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, মৎস্য বিভাগের বৃহত্তর সিলেটে আলাদাভাবে হাওরকে কেন্দ্র করে হাওর মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প বা সিলেট বিভাগীয় মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প করলে দ্রুত উন্নতি করতে হলে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া দরকার। মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধু আইন বা প্রকল্প করে নয়, দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় সর্বস্তরের জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে হবে। একই সাথে মৎস্যজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। কমলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রকৃতিতে সমস্ত মা ও বাবা মাছ থাকতে হবে। অভয়া শ্রমের যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে।