স্বরূপকাঠি সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নাকি কসাইখানা !

0
(0)

হযরত আলী হিরু,পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার নার্সদের অবহেলায় এক শিশুর প্রাণ এবং আর এক শিশুর বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙুল হাড়াতে হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে প্রাণ হারায় সুবহা নামের ১১ মাস বয়সের এক শিশু কন্যা। তার পরের দিন শনিবার নার্সদের অবহেলায় হাতের আঙ্গুল হাড়াতে হয়েছে ৬ মাসের রবিউল ইসলামের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ডায়রিয়া জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সেহাঙ্গল ইউনিয়নের সমুদয়কাঠী থেকে মোহাম্মদ সোহেল খান তার মেয়ে সুবহাকে স্বরূপকাঠি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভার্তি করেন। দুই একজন নার্স তাঁর মেয়েকে দেখে স্যালাইনের ব্যবস্থা করেন। শত ডাকাডাকির পরেও হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে দেখতে আসেননি। রাত ১১টার দিকে সুবহার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে খবর পেয়ে মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আসাদুজ্জামান এসে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এর ৫ মিনিটের মাথায় সুবহা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এ ঘটনায় ওই রাতেই স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে এসে হামলা করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জরুরি বিভাগে ভর্তি হয় বলদিয়া ইউনিয়নের পঞ্চবেকী গ্রামের জাকির হোসেনের ৬ মাসের শিশু সন্তান রবিউল ইসলাম। ভর্তি হওয়ার পর শিশুটির বাম হাতে স্যালাইন পুশ করার জন্য ক্যানুলা বসানো হয়। এর ম্ইাক্রোপোর কাটতে গিয়ে ওয়ার্ড বয় মুকুন্দু শিশুটির বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল কেটে ফেলে। শিশুটির অভিবাবকরা স্বরূপকাঠি থানায় অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি। এদিকে দীর্ঘ দিনের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম আর তার সাথে এই ঘটনায় ফুসে উঠেছে এলাকার জনগন। তারা অভিযোগ করেছে পিরোজপুর সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ ফারুক আলমের কাছেও। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেডিকেল অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, আমি জরূরি বিভাগে ছিলাম বেশ কিছু জটিল রোগী ছিলো যাদের স্থানন্তর করা হয়েছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডের রোগীরা ভালো আছে এ তথ্য নার্সরা দেয়ায় ওই ওয়ার্ডে আমি ঢুকিনি। রাতে যখন যানতে পারি রোগীর অবস্থা খারাপ সঙ্গে সঙ্গে এসে দেখি ওই শিশুকে ওই অবস্থায় বোয়াল মাছ দিয়ে ভাত খাওয়ানো হয়েছে। নাক মুখ দিয়ে সে গুলো বের হচ্ছে। সর্বাত্তক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্ত বাঁচাতে পারিনি। একাই সব দিক সামাল দিতে হয়। এখানে আমার কোন হাতই ছিলো না। এদিকে এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার তানভীর আহম্মেদ সিকদার বলেন, ঘটনা দুটো মর্মান্তিক। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ব্যাক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা নিয়েই ব্যস্ত থাকার অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে তিিিন দাবী করেন। পিরোজপুর সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ ফারুক আলম বলেন, বিষয় গুলো জানার সাথে সাথে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, অভিযোগ প্রমানিত হলে ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.