আগৈলঝাড়ায় সরকারি অফিস ও কোয়াটারে দেড় মাস ধরে পানি সরবারহ বন্ধ॥ চরম দূর্ভোগে বসবাসকারীরা

জয় রায়,আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি॥
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সরকারি অফিস ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোয়াটারে দেড় মাস ধরে পানি সরবারহ বন্ধ রয়েছে। পানি সরবারহ না থাকায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কোয়াটারে বসবাসকারীদের। দেড় মাস যাবৎ পাম্প বিকল হয়ে পানি সরবারহ বন্ধ থাকার পরেও পানি সরবরাহ সচল করতে কোনই পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ।
ভূক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে আগৈলঝাড়া উপজেলার সরকারি দপ্তর সমূহে সরকারি কোয়াটার ও ডরমেটরি ভবনে পানি সরবারহ করা হয়। গত আগষ্ট মাসের শেষ সপ্তাহে হঠাৎ করে পানি সরবারহ বন্ধ হয়ে যায়। পানি সংকটে পরেন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সরকারি কোয়াটারের বাসিন্দারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘ দিন পানি সরবারহ বন্ধ রয়েছে। দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সরকারি অফিস ও কোয়াটারের বসবাসকারীদের। বিষয়টি একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও পানি সরবারহের কোন উদ্যোগে নেই। আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কার্যালয়ের একটি সূত্র জানান, বেশ কিছু দিন আগে উপজেলা পরিষদের পানি সরবরাহের পাম্পটিতে পানি উঠা বন্ধ হয়ে যায়। পাম্প বিকল মনে করে একটি নতুন পাম্প কেনা হয়। তাতেও পানি না উঠায় বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে অবহিত করে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহনে বলা হয়। কিন্তু দুই প্রকৌশলী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন নাই। পরবর্তিতে নির্বাহী কার্যালয়ের উদ্যোগে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, পানি সরবরাহকারী গভীর নলকূপটির ফিল্টারে বালু জমা হয়ে ফিল্টার সমস্যা হয়ে পাম্পটি বিকল হয়ে গেছে। যে কারনে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকার পাশাপাশি কত দিনে পানি সরবরাহ চালু করা হবে সেই ব্যপারে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার অসিম রঞ্জন, আগৈলঝাড়া আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ কমলা রানী মন্ডলসহ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, সরকারি কোয়াটারে প্রায় ৫০টি কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিবার বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পানি না থাকায় বাসা-বাড়ির শৌচাগারসহ আশপাশের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। পুরুষরা দূরে কোথাও পুকুর অথবা খালে গিয়ে কোন রকম গোসল ও কাপড় ধোয়ার কাজ করলেও সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় নারী ও শিশুদের। আগৈলঝাড়া উপজেলা সহকারী সমবায় অফিসার হ্যাপি আকতার বলেন, অনেক দূর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করি কিন্তু বাসার তৈজসপত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রভাষক সেলি বিশ্বাস বলেন, পানি সংকট ও পুরাতন বিল্ডিং এর খসে পড়ার যন্ত্রনায় দূর্বিসহ জীবন যাপন করছি। কোদালধোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পুলিন চন্দ্র বাড়ৈ ও কৃষি কর্মকর্তা রথিন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, এক দেড় মাস পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় আমাদের কোয়াটার বাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে, যেন দেখার কেউ নেই। মহাকষ্টে দিন কাটাচ্ছি। এ প্রসঙ্গে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকৌশলী রাজ কুমার গাইন বলেন, পাম্প ওয়াস করনের জন্য একাধিক টিমের সঙ্গে কথা চলছে খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করা হবে। আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা(ইউএনও) আশ্রাফ আহমেদ রাসেল দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, পাম্পটি বিকল হওয়ার পরে সচল করতে একাধিকবার উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে এমন কি নতুন পাম্প কেনা হয় কিন্তু সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। সর্বশেষ ওয়াস করে সচল করার চেষ্টা চলছে তাতে চালু না হলে নতুন গভীর নলকূপ বসাতে হবে। এতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। জরুরী ভিত্তিতে পানি সরবারহ করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।