বাবুগঞ্জে বিদ্যুৎপৃষ্ট মারা দম্পতির চার অনাথ শিশুর পাশে দাড়ালেন এক দানশীল ব্যাক্তি

বাবুগঞ্জে বিদ্যুৎপৃষ্ট মারা দম্পতির
চার অনাথ শিশুর পাশে দাড়ালেন এক দানশীল ব্যাক্তি
মোঃ জামাল উদ্দিন:
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রমজানকাঠী গ্রামের বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া দম্পতি কামাল হাওলাদার ও মমতাজ বেগমের রেখে যাওয়া ৪ অনাথ শিশুদের প্রতি সাহায্যর হাত বাড়িয়ে মানবতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এক ব্যাক্তি। তার বাড়ী বরিশালের গৌরনদীতে । তিনি এলাকায় দানবীর হিসেবে পরিচিত। এছাড়া ঢাকার একজন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী। এতিমদের প্রতিপালনের দায়ভার গ্রহন করে তিনি উদারতার পরিচয় দিলেন। নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখে ওই দানশীল ব্যাক্তি গৌরনদী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ জামাল উদ্দিনের মাধ্যমে গতকাল সোমবার অনাথ শিশুদের হাতে নগদ ২০ হাজার টাকার অনুদান তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন ।
আরো জানাগেছে, ওই অনাথ শিশুরা কর্মজীবনে প্রবেশ না করা পর্যন্ত তাদের প্রত্যেকের জন্য ৫ হাজার টাকা করে প্রত্যক মাসে ৪ জনের লেখাপড়া ও ভরনপোষনের খরচ বাবদ মাসিক ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। বাপ-মা হারা অনাথ শিশু ৪ টি যেন কোন কষ্ট না পায়,সমাজে কারও কাছে অবহেলার পাত্র না হয় সে জন্যই তিনি নিজ থেকে এ উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। একই সাথে নিজের নাম পরিচয় গোপন রাখার জন্য মিডিয়ার কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন এই মহান ব্যাক্তি।
সোমবার দুপুরে রমজানকাঠী গ্রামে নিহত কামাল হোসেনের পুত্র রবিন (১২) মেয়ে হাবিবা (৮) হামিদা (৬) এদের হাতে ওই ব্যাক্তির পাঠানো ১ম কিস্তির নগদ ২০ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিহত কামাল হোসেনের ফুফাত ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়নাল হক , উজিরপুরের সাংবাদিক শাকিল মাহমুদ বাচ্চু, গৌরনদীর সাংবাদিক ইউনুস আলী ,স্থানীয় বাসিন্দা চান্দু মোল্লা, শিকারপুর ইউনিয়ন শ্রমীক লীগের নেতা সুমন মৃধা,নিহতদের ৪ চাচা ও স্বজনরা। শিশুদের বড় চাচা মোখলেছুর রহমান (৭০) সহ অন্যান্য চাচারা অনাথ ৪ শিশুর প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানোর জন্য দানশীল ওই ব্যাক্তির প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে জানান, সমাজে এখনো ভাল মানুষ আছে।
উল্লেখ্য,গত ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার বাড়ীর পার্শ্ববর্তি পাট ক্ষেতের মধ্যে পাট শাক তুলতে গিয়েছিলেন গৃহবধু মমতাজ বেগম । এ সময় বিদ্যুতের ছেড়া তারে জড়িয়ে তিনি ছটফট করতে থাকেন। স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুতপৃষ্ট হয়ে স্বামী কামাল হোসেন (৪০) ও স্ত্রী মমত্জ বেগম (৩০) দু’জনেই প্রান হারান। এ কারণে ওই দম্পতির শিশু ৪টি সন্তান রবিন (১২), হামিদা (৮) , হাবিবা (৬) ও এক বছর বয়সের শিশু জেসমিন অকালে অনাথ হয়ে পরে। এ সংবাদটি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে মানবতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন ওই ব্যাক্তি। তিনি মহাবিপদের সময় ওই শিশুদের পাশে দাড়িয়ে মহান উদারতার পরিচয় দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় এলাকাবাসী তাকে ধন্যবাদ জানান।