কমলগঞ্জে নদী গর্ভে বিলীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বসতভিটা

জয়নাল আবেদীন,কমলগঞ্জ //
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীর বাঁধ ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে বসত-ভিটাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাঁধ নির্মান না হলে অচিরেই নদীগর্ভে পৌর এলাকার রামপাশা গ্রাম ও কমলগঞ্জ আইডিয়াল হাই স্কুলসহ নদী পাড়ের বসতভিটা ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-ছাত্র ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে নদী ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের একাধিক বার জানানো হলেও এখনও কোন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার পৌর এলাকার রামপাশা গ্রামে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। এখানে কয়েকটি বসতবাড়ি ঝুঁকিতে রয়েছে। ধলাই নদীর প্রবল ভাঙ্গনে রামপাশা গ্রামের এক অংশ ওপারে গিয়ে মিশেছে। বৃষ্টি হলেই ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়, ভেঙ্গে নিয়ে যায় জায়গা জমি বসত ভিটা গাছগাছালি, এবার ভাঙ্গন দিলে তলিয়ে যাবে পানিতে সারা গ্রাম, ফসল, বাড়িঘর, জন্ম থেকেই এ বিষয় অতি পরিচিত। স্থায়ী সমাধান না হলে ক্ষতি হবে রামপাশাবাসীর। প্রায় অর্ধেক গ্রামের জায়গা জমি চলে গেছে নদীর ওপর পাড়ে, ভিটা ছাড়া করেছে অনেক পরিবারকে, সিমেন্টর তৈরি ব্লগ দ্বারা পাড় ভাঙ্গা এ অংশটুকু বাধ না হলে রামপাশা গ্রাম থাকবে না বলে জানান স্থানীয়রা।
এছাড়া ৬ নং ওয়ার্ডে ধলাই নদীর তীরবর্তী বসতভিটাসহ নদীর তীরে অবস্থিত আইডিয়াল হাই স্কুলের পিছনদিকে ধলাই নদীর বাঁধটির ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। কিন্তু এসব বাঁধ ভাঙ্গনের বিপরীতে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। ১৯৯৩ সালে স্থাপিত হয় কমলগঞ্জ আইডিয়াল হাই স্কুল। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পিছনদিকে ধলাই নদীর বাঁধটির ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় ৪শতাধিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
কমলগঞ্জ আইডিয়াল হাই স্কুলের সভাপতি সৈয়দ ইব্রাহীম মোহাম্মদ আব্দুহু ও প্রধান শিক্ষক মাসুক আহমেদ রামপাশা গ্রামের ব্যবসায়ী মিন্টু মালাকার, চাকুরীজীবি প্রসেনজিত পাল জানান, এলাকার লোকজন নিজের বসত ভিটা বাঁচাতে নিজেই বাঁধ রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। তারা আরও বলেন, ‘প্রতিবছর বাধ মেরামতের জন্য বরাদ্দ আসলে স্কুলের মাঠ থেকে মাটি কেটে বাঁধ নির্মান করা হয়, কিন্তু তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে কাজের কাজ কিছুই হয়না। বরং স্কুলের মাঠ ভরাট করতে হিমশিম খেতে হয়। জরুরী ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত না করলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে স্কুলটি ও আশপাশের বসতভিটা। বিপাকে পড়বে ৪শতাধিক শিক্ষার্থী।’
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক জানান, এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলোচনা হয়েছে। ভাঙ্গা বাঁধ মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।