আজানের ধ্বনিতে যে ফুল ফোটে

সবুজবাংলা ওনলাইন ডেস্কঃ
আজান মুসলমানের একটি ধর্মীয় পরিভাষা। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় আল্লাহর পথে আহ্বানকে আজান বলা হয়। আজানের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা হয়, কল্যাণের পথে আহ্বান জানানো হয়। আজানের ধ্বনি বিশ্বাসী মানুষের হৃদয়-মনে সাড়া জাগায়। তাকে কল্যাণের পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়। কিন্তু এই আজান কি শুধু মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে, নাকি সৃষ্টিজগতের অন্যদের ওপরও প্রভাব ফেলে? হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, শুধু মানুষ নয়, বরং সাধারণভাবে সৃষ্টির ওপরও আজানের প্রভাব পড়ে। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন শয়তান পালিয়ে যায়। যতক্ষণ না আজান শোনা যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬০৮)
সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত অন্য হাদিসে নবজাতক শিশুর কানে আজান ও ইকামাত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রখ্যাত দার্শনিক আলেম শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভি (রহ.) এই হাদিস উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘আজান ইসলামের নিদর্শন ও দ্বিনে মুহাম্মদির শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা। নবজাতকের কানে আজান দিতে বলা হয়েছে, কারণ তা শয়তানকে দূরে রাখে। জন্মের পর শয়তান নবজাতককে কষ্ট দেয়।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা ১৪৫) আল্লামা ইবনে কাইয়্যিম (রহ.) বলেছেন, ‘যেন শিশুর মনে তার প্রভুর বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব স্থান পায় এবং ইসলামে প্রবেশের সাক্ষ্য তার মনে প্রবেশ করে।’ (তুহফাতুল মাওদুদ বিআহকামিল মাওলুদ, পৃষ্ঠা ২১)
এ ছাড়া আজানের সময় পৃথিবীতে দায়িত্ব পালনকারী ফেরেশতাদের ‘দায়িত্ব পরিবর্তন’ বলেও হাদিসে পাওয়া যায়।
হাদিসের নির্দেশনা ও তার ব্যাখ্যা থেকে বোঝা যায়, সৃষ্টজীব তথা প্রকৃতির ওপর আজানের প্রভাব অত্যন্ত ইতিবাচক। আজানের মাধ্যমে স্রষ্টার সঙ্গে সৃষ্টিজগতের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। কয়েক বছর আগে আমেরিকান টিভি চ্যানেল সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি আরো জোরালোভাবে প্রমাণিত হয়। প্রতিবেদনে দেখানো হয়, আজানের ধ্বনিতে একটি ফুল ফুটছে। আজারবাইজানের একটি বাগানে স্থানীয় প্রজাতির এই বিশেষ ফুলের সন্ধান পান প্রতিবেদক।
প্রতিবেদনের ভাষ্য অনুযায়ী, মোহাম্মদ রাহিম ইলদারোভ এই বাগানের মালিক। তিনি ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের ফুল সংগ্রহ করছেন। তাঁর বাগানে রয়েছে হরেক রকমের ফুল। রং, ঘ্রাণ, প্রজাতির বিচারে প্রতিটি ফুল বিশেষ বৈশিষ্ট্যের দাবিদার। ফুলগুলোর ফোটার সময়ও ভিন্ন ভিন্ন।
মোহাম্মদ রাহিম ইলদারোভের বাগানে পাওয়া বিশেষ ফুলটি আজানের ধ্বনিতে প্রস্ফুটিত হয়। প্রতিবেদক পাঁচ ওয়াক্ত আজানের সময় ফুলগুলো ফোটার দৃশ্য ভিন্ন ভিন্নভাবে ভিডিও করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আল্লাহর নাম উচ্চারণের সময়ই ফুটছে ফুলগুলো। এ দৃশ্যই প্রমাণ করে, ইসলাম প্রকৃতির ধর্ম। ইসলাম, মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে গভীর বন্ধন বিদ্যমান। (ইউটিউবে সিএনএনের প্রতিবেদনের ভিডিও লিংক : https://www.youtube.com/watch?v=qgeCCZRaY_Q)(তথ্য সুত্র জনপ্রিয় দৈনিক কালের কন্ঠের ইসলাম ও জীবন পাতা থেকে)