রোহিঙ্গাদের জন্য ৪০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
এস এম রহামান হান্নান, স্টাফ রিপোর্টার
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য ৪০ কোটি ডলার দিতে প্রস্তুত রয়েছে বিশ্বব্যাংক। বুধবার দুপুরে শেরে বাংলা নগরে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান একথা জানান।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ নামে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন। এ সময় জনসংযোগ কর্মকর্তা মেহরীন এ মাহবুবসহ সংস্থাটির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডা) তহবিল থেকে ৪০ কোটি ডলারের সহায়তা পেতে পারে। এই অর্থ অনুদান বা ঋণ দুভাবে হতে পারে। তবে অনুদান হিসেবে পেতে এই অর্থ দেয়ার আগে বিশ্বব্যাংক দেখবে সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য কী কী কর্মসূচি হাতে নিয়ে নিয়েছে। অর্থাৎ অনুদানের প্রাপ্তি নির্ভর করবে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার কী ধরনের প্রকল্প বা উদ্যোগ হাতে নেয়, তার ওপর।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বব্যাংক যথেষ্ট সচেতন। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গেও আলোচনা করেছি। এখন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনার আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলেন ড. জাহিদ হোসেনও। তিনি সাংবাদিকদের জানান, রোহিঙ্গাদের কারণে দেশের অর্থনীতিতে কি ধরনের প্রভাব পড়বে তা এখনই বলা কঠিন। তবে এখন পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে, এতে জাতীয় পর্যায়ে মূল্যস্ফীতিতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু স্থানীয় অঞ্চলে অবশ্যই মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম। চলতি অর্থবছরে সরকারের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হলো ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া এ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ হবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক; যা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি। চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির গড় সরকারি লক্ষ্যমাত্রা হলো ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
এদিকে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাংকের কাছে ২৫ কোটি ডলার চেয়েছে সরকার। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক বৈঠকের পর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এ সংক্রান্ত প্রস্তাব আমরা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) দিয়েছি। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নেগোশিয়েট যা করার তারাই করবে। আমরা প্রতিনিধি দলকেও বলেছি। তারা খুব পজেটিভ, আমাদের সাহায্য করবে।