মিষ্টি দই উপকারি ভাল জিনিসও বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ কিন্তু ভাল নয় ?

0
(0)

মোঃ আহছান উল্লাহ //
মিষ্টি দই শরীরের জন্য কতটা উপকারি? অাসুন জেনে নেওয়া যাক। শরীরকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে দইয়ের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এতে উপস্থিত প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ভাল ব্যাকটেরিয়ারা ওজন কমানোর পাশাপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতে, শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দূর করতে, হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে, ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিক রাখতে, জ্বরের প্রকোপ কমাতে এবং প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। টক দই খেলে এই যে শরীরের এত উপকারে লাগে। মিষ্টি দই খেলেও কি একই ঘটনা ঘটে?
টক দইও মিষ্টি হয়
দুধে উপস্থিত ল্যাকটোস হল প্রাকৃতিক মিষ্টি জাতীয় উপাদান। তাই তো দুধ দিয়ে বানানো দইয়ে চিনি না মেশালেও অল্প মিষ্টি লাগে। আর এই প্রাকৃতিক মিষ্টিতে যেহেতু কোনও ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে না। তাই টক দই খেলে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। কিন্তু মিষ্টি দই বানানোর সময় আলাদা করে চিনি মেশান হয়। ফলে দইয়ের পুষ্টিগুণ তো কমেই সেই সঙ্গে এতে ক্যালোরির মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।
মিষ্টি দইয়ে থাকা চিনি একেবারেই ভাল নয়
দই শরীরের জন্য উপকারি হলেও মিষ্টি দইকে কিন্তু সেই সম্মান দেওয়া যাবে না। কারণ এতে উপস্থিত চিনি এক ধাক্কায় শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে প্রতিদিন মিষ্টি দই খেলে ওজন বৃদ্ধি পাবেই পাবে। সেই সঙ্গে হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস, অস্ট্রিওপরোসিস সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বহু গুণে বাড়বে। তাই এবার থেকে মিষ্টি দই বা অন্য স্বাদের কোনও বাজার চলতি দই খাওয়ার আগে একবার অন্তত ভাবে দেখবেন যে আপনি পুষ্টিকর খাবারের মোড়কে বিষ খাচ্ছেন না তো।
কেমন পরিমাণ চিনি দৈনিক খাওয়া যেতে পারে
সুস্থ থাকতে যতটা পারবেন চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলবেন। আর এমনটা করতে না পারেন, তাহলেও ভুলেও দৈনিক ক্যালোরির চাহিদার ১০ শতাংশের বেশি চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া চলবে না। প্রসঙ্গত, আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ করা এক রিপোর্ট অনুসারে মেয়েদের দৈনিক ৬ চামচ আর পুরুষদের কম-বেশি ৯ চামচের বেশি চিনি খাওয়া উচিত নয়। আর একথা কী আপনাদের জানা আছে যে মিষ্টি দইয়ে এর থেকে অনেক বেশি পরিমাণে চিনি থাকে। তাহলে ভাবুন, সারা দিনে যে পরিমাণ ক্যালোরি খাওয়ার কথা বলে থাকেন চিকিত্সকেরা, একবার মিষ্টি দই খলেই শরীরে ক্য়ালোরির মাত্রা তার থেকে অনেক বেড়ে যায়। তাই আজ থেকেই মিষ্টি দইয়ের পরিবর্তে টক দই খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন অনেক সুস্থ থাকবেন।
দই ও রোজের ডায়েট
প্রতিদিন দই খাওয়া বাস্তবিকই স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারি। যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে দইয়ে উপস্থিত একাধিক পুষ্টিকর উপাদান হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস সব একাধিক মারণ রোগকে দূরে রাখে। তাই দীর্ঘকাল সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে রোজের ডায়াটে টক দই থাকা মাস্ট। প্রসঙ্গত, টক দইয়ে মাত্র ১২ গ্রাম মিষ্টি থাকে, যা শরীরের পক্ষে একেবারেই ক্ষতিকর নয়। এবার বুঝতে পারছেন তো চিকিত্সকেরা কেন মিষ্টি দইয়ের পরিবর্তে টক দই খাওয়ার পক্ষে সাওয়াল করেন।
বেশি মাত্রায় টক দই খাওয়াও ভাল নয় কিন্তু
দিনে ১-২ বাটি টক দই খেলেই দারুন উপকার পাওয়া যায়। তাই বেশি মাত্রায় দই খাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। এমনটা ভেবে নেবেন যে বেশ বেশি করে দই খেলে শরীর বেশি মাত্রায় ভাল থাকবে। বরং এক্ষেত্রে উল্টো ঘটনা ঘটে। বেশি মাত্রায় টক দই খেলে শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার থেকে অনেক বেড়ে যায়। ফলে এই সম্পর্কিত নানাবিধ রোগ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এখানেই শেষ নয়, টক দইয়ে উপস্থিত ভাল ব্যাকটেরিয়া এবং ক্যালসিয়ামও যদি বেশ করে শরীরে প্রবেশ করে তাহলে ডায়ারিয়া, পেটে যন্ত্রণা এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সব শেষে একটা কথা বলতেই হয় যে, ভাল জিনিসও বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ কিন্তু ভাল নয়।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.