শমশেরনগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজে সংবাদ সম্মেলনে গভর্ণিং বডির প্রতিবাদ

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি//মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজের তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনলাইন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে ও বিভিন্ন অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে কলেজ গভর্ণিং বডির সদস্যবৃন্দ। গতকাল(৭ এপ্রিল) রবিবার বেলা ১১ টায় কলেজের একটি হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষের লিখিত বক্তব্যে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
শমশেরনগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি মোসাদ্দেক আহমদ মানিক এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গভর্ণিং বডির সদস্য শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ, মুর্শেদুর রহমান সেজু, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মছব্বির। অধ্যক্ষ মোর্শেদুর রহমান এর লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ৩১ মার্চ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কলেজের স্টিলের দরজায় কয়েকবার জোরে শব্দ হওয়ায় দপ্তরী কর্তৃক খবর পেয়ে অধ্যক্ষ ও শিক্ষক মাসুদ চৌধুরীকে নিয়ে ক্লাসরুমে গিয়ে দরজায় শব্দ হওয়ার কারণ জানতে চান। এ সময়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাজেদা আক্তার রিয়া উপস্থিত হয়ে ছাত্রছাত্রীর সম্মুখে দরজায় লাথি মারার কথা স্বীকার করে। তখন অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের উপদেশ মূলক কথা বলে ছাত্রীর ২ এপ্রিল কলেজে আসার কথা বলে অফিসে চলে যান। ঐদিন বিকালে মেয়ের বাবা অধ্যক্ষকে ফোন করে দেখা করবেন বলে নিশ্চিত করেন। পরবর্তীতে ২ এপ্রিল সকালে মেয়েটির বাবা অধ্যক্ষকে ফোন করে ধমকের স্বরে বলেন, ‘আপনি আমার মেয়ের হার্ট অ্যাটাক করিয়েছেন।’
এরপর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কলেজের বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদানের অনুমতি চেয়ে ৪ এপ্রিল সাজেদা আক্তারের লিখিত একটি দরখাস্ত তার বোন এসে অধ্যক্ষের হাতে প্রদান করে। অধ্যক্ষ জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটির শারীরিক অসুস্থ্যতাজনিত খবর শুনে মানবিক দৃষ্টিতে গভর্ণিং বডির সদস্যসহ অধ্যক্ষ মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থা দেখতে পান। এসময়ে মেয়েটি ও তার বাবাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও মিডিয়ায় প্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে এসবের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে সাজেদার বড় বোন জানান।
অধ্যক্ষ জানান, একটি সামাজিক মাধ্যমে মেয়েটির মিথ্যা সাক্ষাৎকার অপপ্রচারের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এছাড়াও মেয়েটির বাবা নিজে কলেজে এসে গভর্ণিং বডির সদস্য ও কলেজ শিক্ষকদের সাথে ভুলের অবসান করবেন। তবে তিনি কথা দিয়েও কলেজে আসেননি। ৬ এপ্রিল কলেজ পরিচালনা পর্যদ ও শিক্ষকদের সভায় সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাছাড়া ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সাত দিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়।
তবে অভিযোগ বিষয়ে সাজেদার বাবা কুতুব আলী ৩১ মার্চের দরজায় লাথি ও জোরে শব্দ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ মোর্শেদুর রহমান ক্লাসে গিয়ে সাজেদাকে ছাত্রছাত্রীদের সম্মুখে দাঁড় করিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। মেয়েটি ক্ষমা চাইলেও অধ্যক্ষ তাতে কর্ণপাত করেননি। পরে ক্লাস শেষ করে মেয়েটি দুপুরে বাড়ি ফিরে ঘটনাবলী খোলে বলে। সন্ধ্যার পর মেয়েটি অসুস্থ হলে স্থানীয় চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন। পরে ১ এপ্রিল রাত পৌণে ৯ টায় সাজেদাকে মৌলভীবাজারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি এবং দু’দিন পর মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। বিষয়টি ফোনে কলেজের অধ্যক্ষকে অবহিত করলে সন্তোষজনক কোন জবাব দেননি বলে তিনি দাবি করেন। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের সাথে কথা হয়েছে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেবসহ দু’পক্ষকে নিয়ে শীঘ্রই বৈঠকে বসা হবে।