উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-কমলগঞ্জে টাকা বিতরণের অভিযোগে নৌকা প্রতীক সমর্থকদের হাতে লাঞ্ছিত আ’লীগ সভাপতি

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি//আগামী ১৮ মার্চ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামীলীগ মনোনিত ও আওয়ামী ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থীর নেতা কর্মীদের ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে টাকা বিতরণের অভিযোগ তুলে নৌকা প্রতীক সমর্থকদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর বড় ভাই মোসাদ্দেক আহমদ। একই বিষয়ে আ’লীগ সভাপতির পক্ষালম্বন করার অভিযোগে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের হাতে অপদস্থ হয়েছেন এক সাংবাদিকও। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ৯টায় পৌরসভার নগর এলাকায় কাউন্সিলর আফজাল মিয়ার বাড়িতে।
পৌর কাউন্সিলরের আফজালের বাড়ি বাড়িতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতিকে লাঞ্ছিত করে আটকিয়ে রাখার খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল আ’লীগ সভাপতিকে উদ্ধার করেন। অন্যদিকে আওয়ামীলীগ নেতাকে অহেতুক লাঞ্ছিত করলেন এমন মন্তব্য করায় নৌকা প্রতীক সমর্থকরা উপজেলা চৌমুহনায় দৈনিক সংবাদ প্রত্রিকার কমলগঞ্জ প্রতিনিধি শাহীন আহমদকেও অপদস্থ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কমলগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমতিয়াজ আহমদের বড় ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোসাদ্দেক আহমদ শুক্রবার রাতে নগর এলাকায় পৌর কাউন্সিলর আফজাল মিয়ার বাড়িতে যান। স্বতন্ত্র প্রার্থী ছোট ভাই ইমাতয়াজ আহমদের পক্ষে ভোট আদায়ে টাকা নিয়ে রাতে আ’লীগ সভাপতি মোসাদ্দেক আহমেদ কমিশনার বাড়িতে গিয়েছেন এমন অভিযোগ তোলে নৌকার সমর্থকরা সেখানে গিয়ে লাঞ্ছিত করেন।
ঘটনা সম্পর্কে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী রফিকুর রহমান বলেন, দলের বিরুদ্ধে গিয়ে ছোট ভাইকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করে নৌকার বিরুদ্ধে ব্যস্ত উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোসাদ্দেক আহমদ। এমনকি তারা গত ২ দিন ধরে ভোটারদের টাকা বিতরণের চেষ্টা করছেন। এ খবরেই বিক্ষোব্দ গ্রামবাসীরা কাউন্সিলর আফজালের বাড়িতে নেতাকর্মীরা গেলে বাক বিতন্ডা হয়। তবে লাঞ্ছিত করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, সংবাদকর্মী হয়ে প্রকাশ্যে এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনা ও গণ সংযোগে গিয়ে গ্রামবাসীর সাথে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন সাংবাদিক শাহীন। এখানে আর কিছু নয়।
এব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোসাদ্দেক আহমদকে পাওয়া যায়নি। তবে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসাদ্দেক আহমদের ছোট ভাই ইমতিয়াজ আহমদ জানান, তার বড় ভাই পারিবারিক সামজিকতা রক্ষায় কাউন্সিলর আফজালের বাড়িতে যান। তার উপর আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি মনে করেন পরিকল্পিততভাবে মোসাদ্দেক আহমদকে অপদস্থ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার অধিকার সবার রয়েছে। তাই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ বিণয়টি মেনে নিতে পারছেন না অধ্যাপক রফিকুর রহমান। আর তাই তার জ্ঞাতসারেই তার নেতাকর্মীরা এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, গুজবের উপর আ’লীগ সভাপতিকে কিছু লোক অপদস্থ করেছে। একইভাবে এক সাংবাদিক অপদস্থ হয়েছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত জানিয়ে ওসি বলেন, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সতর্কতার সাথে সবকিছু নজরদারিতে করছে।