লাউয়ছড়ার ভেতরে লেবু বাগানে উচ্চস্বরে রাতভর গানবাজনা নিরব ভূমিকা বন্যপ্রাণী বিভাগের

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি// বন্যপ্রাণী এলাকায় উচ্চ শব্দ, মাইকের আওয়াজ নিষিদ্ধ থাকলেও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে বন সংলগ্ন ব্যক্তিগত একটি লেবু বাগানে সাউন্ড বাজিয়ে রাতভর চলে গানবাজনা। গানবাজনার উচ্চ শব্দে বন্যপ্রাণীর অবাদ বিচরণে হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া উদ্যান ঘেষা লেবু বাগানে গানবাজনার আসর বসলেও বন্যপ্রাণী বিভাগ নিরব ভূমিকা পালন করছে।
জানা যায়, একটি প্রভাবশালী মহল জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে খুঁটি বসিয়ে বিদ্যুৎ লাইন লেবু বাগানে স্থানান্তর করে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভিতর ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি লেবু বাগানে সাউন্ড সিস্টেমে উচ্চস্বরে জমজমাট গানের আসর বসে। জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ গেটসহ বিভিন্ন স্থানে মাইক বাজানো ও হাল্লা-চিৎকার করা যাবে না বলে সতর্কতা রয়েছে। তাছাড়া বনের ভেতর দিয়ে লেবু বাগানে বিদ্যুৎ লাইন স্থানান্তর নিয়ে ইতিপূর্বে বিতর্ক দেখা দিলে বিদ্যুতায়নের কাজ সাময়িক বন্ধ হয়ে পড়ে। বনের ভিতর পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট করে কোন কাজ করা যাবে না বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করলেও তা রোধ করা সম্ভব হয়নি।
জাতীয় উদ্যানের ভেতরে বসবাসরত লাউয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সদস্য জানান, উদ্যানের প্রধান ফটক দিয়ে সন্ধ্যার পর একটি পিকআপ যোগে সাউন্ড সিস্টেম প্রবেশ করে ভিতরের একটি লেবু বাগানে নিয়ে যাওয়া হয়।। এরপর রাতে সেখানে একটি আনুষ্ঠানিক প্রোগ্রামে সাউন্ড সিস্টেম শুরু হয় গানবাজনা। উচ্চ স্বরে রাত ১টা পর্যন্ত গান বাজনার ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠে বনের পরিবেশ। মৌলভীবাজার পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নূরুল মোহাইমীন মিল্টন বলেন, নিরব, নিস্তব্দ বন্যপ্রাণী এলাকায় উচ্চ শব্দ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ লাউয়াছড়া উদ্যানের ভিতরে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করে বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকিস্বরূপ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী রাতে অবাধে বিচরণ করে। সেখানে সাউন্ড বক্স কিংবা মাইকের আওয়াজ, হাল্লা-চিৎকার বনের স্বাভাবিক পরিবেশে বিঘœ ঘটবে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সাধিত হবে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে তারা মন্তব্য করেন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চেয়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবস্থান করেও বনবিট কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তবে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় সহকারী বন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ বা খবর জানেন না। খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।