সবুজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক//‘সোনালী কাবিন’-এর বিখ্যাত কবি আল মাহমুদ মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
কবি আল মাহমুদ দীর্ঘ দিন যাবত নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। এজন্য ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ওই দিন কবিকে প্রথমে সিসিইউতে ও পরে আইসিইউতে নেয়া হয়। সর্বশেষ তাকে ‘লাইফ সাপোর্ট’ দেয়া হয়।
বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে সক্রিয় থেকে আধুনিক বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিক, চেতনায় ও বাক্‌ভঙ্গিতে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছেন কবি আল মাহমুদ। তার প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবিও তিনি।
আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মীর আবদুর রব ও মাতার নাম রওশন আরা মীর।
শিক্ষাজীবনে কবি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার সাধনা হাই স্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড হাই স্কুলে পড়ালেখা করেন। মূলত এই সময় থেকেই তার লেখালেখির শুরু। আল মাহমুদ বেড়ে উঠেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিনি মধ্যযুগীয় প্রণয়োপাখ্যান, বৈষ্ণব পদাবলি, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল প্রমুখের সাহিত্য পাঠ করে ঢাকায় আসার পর কাব্য সাধনা শুরু করেন এবং একের পর এক সাফল্য লাভ করেন।
তিনি আল মাহমুদ নামেই অধিক পরিচিত। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ছিলেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্মুখ সমরেও অংশ নিয়েছেন আল মাহমুদ। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠিত সরকার বিরোধী হিসেবে পরিচিত দৈনিক গণকণ্ঠ (১৯৭২-১৯৭৪) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
১৯৫০-এর দশকে যে কয়েকজন লেখক বাংলা ভাষা আন্দোলন, জাতীয়তাবাদ, রাজনীতি, অর্থনৈতিক নিপীড়ন এবং পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার বিরোধী আন্দোলন নিয়ে লিখেছেন তাদের মধ্যে মাহমুদ একজন। লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৬৬) তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।